• সামসির রথযাত্রার ৪১তম বছরে পদার্পণ, হচ্ছে জমজমাট উৎসব
    বর্তমান | ২৭ জুন ২০২৫
  • উজির আলি, চাঁচল: চার দশক আগের কথা। তখন গ্রামের মানুষ রথের দড়ি টানার জন্য পাড়ি দিতেন চাঁচল সদরে। আবার কেউ পরিবার নিয়ে ছুটতেন মালদহ সদর সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। এলাকার ভক্তদের জন্য সেই সময় সামসির বাসিন্দা নারায়ণ চন্দ্র ঘোষ নিজের এলাকাতেই রথের আয়োজন করতে উদ্যোগী হন। যাতে গ্রামের মানুষ নিজের জায়গাতেই পবিত্র উৎসবে অংশ নিতে পারেন। এলাকার বিশিষ্টজন শম্ভুনাথ চৌধুরী, বৈদ্য চৌধুরী, বিজয় চৌধুরী, দিলীপ আগরওয়ালা, হেমন্ত কর্মকার, সুশীল সুরেখা, মানিকচন্দ্র দাস ও ঘাসিরাম লাট প্রমুখ বৈঠক করে রথযাত্রা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৮৪ সাল থেকে প্রথম সামসিতে রথযাত্রার সূচনা হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর গ্রামবাসীর সহযোগিতায় ধুমধাম করে রথযাত্রা হয়ে আসছে। 

    প্রতিবছর রথের দড়ি দেন সুশীল সুরেখা। ধীরে ধীরে সেখানকার রথ উৎসব উত্তর মালদহে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সামসিতে এবছর ৪১ বছরে পদার্পণ করল রথযাত্রা উৎসব। সামসি রেল স্টেশন লাগোয়া কালীমন্দির থেকে রথযাত্রা শুরু হয়ে পৌঁছায় দুর্গাতলার মাসির বাড়ি মন্দিরে। সেখানেই সাতদিন অধিষ্ঠান করেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। এই উৎসবে সামসি সহ আশপাশের একাধিক গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ভক্তিভরে রথের দড়িতে টান দেন। 

    প্রথমদিকে চাঁচল থেকে প্রকাণ্ড নিমগাছের কাঠ এনে তৈরি হয়েছিল রথ। তখন থেকেই নিমকাঠের রথে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে বসানো হয়। ২০০৬ সালে রথের কাঠামোয় কিছু পরিবর্তন আনা হয়। রথযাত্রায় ভক্তদের ভিড় থাকে সামসি চত্বরে। ঘোষ পরিবার ও স্থানীয়রা একত্রিত হয়েই রথযাত্রার আয়োজন করে থাকেন প্রতিবছর। সেখানকার রথের বিশেষত্ব হল, ১১১ টাকার অন্নভোগ। মাটির সরাতে অন্নভোগ নিবেদন করা হয়।

    রথযাত্রায় দুর্গাতলায় বসে মেলা। প্রয়াত নারায়ণ চন্দ্র ঘোষের পৌত্র গোরাচাঁদ ঘোষ বলেন, এই রথ সামসির মানুষের মিলনের একটা প্রতীক। ৪০ বছর ধরে আমাদের পরিবার এই রথযাত্রার সঙ্গে যুক্ত। এবছর ৪১তম বর্ষে পদার্পণ করল সামসির রথ। স্থানীয় বাসিন্দা অভিষেক সিঙ্ঘানিয়া বলেন, শৈশব থেকে রথের দড়ি টানছি। এ এক অন্যরকম অনুভূতি।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)