ঝাড়খণ্ডে জলাধার থেকে জল ছাড়ায় বিপদসীমা ছুঁইছুঁই অজয়
বর্তমান | ২৭ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, বীরভূম: ঝাড়খণ্ডের শিকাটিয়া ড্যাম থেকে বিপুল জল ছাড়ায় অজয় নদের জল বিপদসীমা ছুঁইছুঁই। জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় ইলামবাজার সংলগ্ন জয়দেব এলাকায় অস্থায়ী কজওয়ে পারাপার বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে ওই ড্যাম থেকে জল ছাড়া হয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে কজওয়ে ভেসে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার প্রশাসনের নির্দেশে ইলামবাজার থানার পুলিস কজওয়েতে চলাচল বন্ধ করে দেয়। আপাতত ইলামবাজার ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার এলাকাগুলির মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নতুন সেতুর কাজ সম্পূর্ণ হলেও চালু হয়নি। এদিন সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাইক ও ছোট গাড়ি পারাপার করলেও ভারী লরি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন।
অজয় নদে জল বাড়লেই ইলামবাজারে কজওয়ে বন্ধ হয়ে যায়। তবে এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমানের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বিশেষত কৃষক ও ছোট ব্যবসায়ীরা নদী পারাপার করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। তাই নদীতে জল বাড়লে তাঁদের দুশ্চিন্তার অন্ত থাকে না। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে প্রশাসন ওই কজওয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। তাতে সমস্যায় পড়ছেন ইলামবাজার থানার জয়দেব-কেন্দুলি, ঘুড়িষা, শীর্ষা, ধরমপুর প্রভৃতি পঞ্চায়েতের মানুষজন। একইভাবে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর, আসানসোল, রানিগঞ্জ, অণ্ডালের মানুষজন বীরভূমে আসতে পারছেন না।
দুই জেলার নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের কথা মাথায় রেখে ২০১৮সালে অজয় নদে সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। ইলামবাজারের টিকরবেতা গ্রাম থেকে শুরু হয়ে সেটি শেষ হয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের শিবপুর এলাকায়। প্রায় তিন কিলোমিটার এই সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ১৩৩ কোটি টাকা। পূর্ত(সড়ক) দপ্তরের আসানসোল হাইওয়ে ডিভিশন সেই কাজ সম্প্রতি শেষ করেছে। কিন্তু উদ্বোধন না হওয়ায় দুই জেলার মানুষজন ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন। এদিন কজওয়েতে চলাচল বন্ধ হওয়ায় নতুন সেতুতে বাইক, টোটো প্রভৃতি যান চলাচল করছে। সকালের দিকে ভারী ডাম্পার ও লরি চলাচল করলেও প্রশাসন পরে তা বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অজয় নদের উপর সেতুর নির্মাণকাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধন না হওয়ায় সাধারণ মানুষ সেটি ব্যবহার করতে পারছেন না। ফলে কজওয়ের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ইলামবাজারের ব্যবসায়ী বিমল মাহাত বলেন, জয়দেব কজওয়ে এদিন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন পশ্চিম বর্ধমানের বাজারে মালপত্র পাঠানো বন্ধ। অনেক টাকার ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী শিবলাল মণ্ডল বলেন, সেতুটি তৈরি হলেও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সময়মতো উদ্বোধন হলে এই সমস্যায় পড়তে হত না।
ইলামবাজারের বিডিও অনির্বাণ মজুমদার বলেন, নদীতে জল বেড়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবেই কজওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নতুন সেতু কবে উদ্বোধন হবে জেলা প্রশাসন বলতে পারবে।