কৃষ্ণরায়ের রথ তেহট্টের বাসিন্দাদের আবেগ ভিড় জমান বহু মানুষ
বর্তমান | ২৭ জুন ২০২৫
সৌরভ ভট্টাচার্য, তেহট্ট:
তেহট্টের কৃষ্ণরায়ের রথের সঙ্গে এলাকার মানুষের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। এই শতাব্দী প্রাচীন রথ ঘিরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ছবি ভেসে ওঠে। রথ সারা তেহট্ট পরিক্রমা করে। সেই সঙ্গে রথযাত্রাকে ঘিরে মন্দির চত্বরে বসে মেলাও। মেলায় বিভিন্ন গ্রামের মানুষ তাঁদের পসরা সাজিয়ে বসেন। কয়েক হাজার মানুষের সমাগমে জমে ওঠে তেহট্টের রথ।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, কৃষ্ণরায়ের মন্দির তিনশো বছরের বেশি পুরনো। মন্দির দোচালা। মন্দিরে অধিষ্ঠান করেন একমাত্র কৃষ্ণ। রাই না থাকলেও এলাকার বাসিন্দারা দেবতাকে কৃষ্ণ রায় বলেই ডাকেন। এই কৃষ্ণ রায়ের রথযাত্রা শুরু হয় দেড়শো বছর আগে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, তেহট্ট মহকুমায় সবচেয়ে পুরনো কৃষ্ণরায়ের রথযাত্রা। আগের রথ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন নতুন রথ তৈরি হয়েছে। নিম, শাল, সেগুন কাঠ দিয়ে তৈরি রথ। রথযাত্রার দিন বিগ্রহকে মন্দির থেকে নিয়ে রথের উপর বসানো হয়। তারপর সেই রথ মন্দির থেকে বেরিয়ে বাজার, হাউলিয়া পার্ক মোড়, পিডব্লুডি হয়ে ফের মন্দিরে প্রবেশ করে। এই সারা রাস্তায় মানুষ কাতারে কাতারে দাঁড়িয়ে থাকে কৃষ্ণরায়ের রথ দর্শনের জন্য। হিন্দুরা ছাড়াও রথের রশি ছোঁয়ার জন্য অন্য সম্প্রদায়ের মানুষও ভিড় করেন। সব সম্প্রদায়ের মানুষ এই মন্দিরে রথের দিন পুজো দেন। এখানে কোনও মাসির বাড়ি না থাকায় মন্দিরেই রথ প্রবেশ করে। আবার উল্টোরথে মন্দির থেকে ঠাকুর বেরিয়ে পিডব্লুডি হাউলিয়া পার্ক মোড়, বাজার হয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন। এবিষয়ে মন্দির কমিটির সম্পাদক ও প্রধান সেবাইত কাজলকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, এই রথ প্রায় ২০০বছরের পুরনো। এই রথযাত্রা উৎসবে সকল ধর্মের মানুষ যোগ দেন। রথ যাত্রা ঘিরে বসে মেলাও। মেলা ও রথযাত্রা ঘিরে যাতে কোনও বিশৃঙ্খলা না হয়, তার জন্য প্রশাসন যেমন তৎপর থাকে তেমন মন্দির কমিটিও সহযোগিতা করে। মন্দিরের পুরোহিত সৈকত ভট্টাচার্য বলেন, কৃষ্ণ রায়কে এলাকার মানুষ জাগ্রত বলে বিশ্বাস করেন। স্নানযাত্রার পর বিগ্রহের অঙ্গরাগ হওয়ার জন্য বেশ কয়েকদিন মন্দিরে বিগ্রহ থাকে না। সেই কারণে কৃষ্ণ রায়ের রথ দেখার জন্য মানুষ উৎসুক হয়ে থাকেন।