কখনও ছুরি দিয়ে, কখনও দড়ি দিয়ে আবার কখনও গ্যাস জ্বালিয়ে, বন্ধ ঘরের ভিতর থেকে আত্মহত্যার হুমকি নাবালকের। এমন কাণ্ডের খবর পেয়ে ছুটে এল দমকল,পুলিশ। আগুন যাতে না লাগে তার জন্য আগেভাগেই ছেটানো হলো জল। শেষে ঘরের জাফরি জানালা ভেঙে, টাকার প্রলোভন দিয়ে বের করা হল ওই নাবালককে । হুগলির বাঁশবেড়িয়ায় কয়েক ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস নাটকের যবনিকা পতন হল এভাবেই।
স্থানীয় সূত্রে খবর, চক বাঁশবেড়িয়া তিন নম্বর গুমটি এলাকায় মাস খানেক আগে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে বিহারের একটি পরিবার। আগে তারা গ্যাঞ্জেস জুটমিল লাইনে থাকত।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর হঠাৎ নিজের মা বোনকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে নিজেকে বন্দি করে ফেলে এক নাবালক। তার পরই নিজেকে শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে। তার এই আচরণে ভয় পেয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করে তাঁর মা। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয় না। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে পাড়া প্রতিবেশীরাও জড়ো হয়ে যান।
ঘরের ভিতর থেকে লাগাতার চলতে থাকে হুমকি। কখনও বলে ছুরি নিজের বুকে বসিয়ে দেবে, কখনও আবার গলায় দড়ির হুমকি। আবার গ্যাস খুলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার কথাও বলে। দরজা ভাঙার চেষ্টা করলে ফল ভালো হবে না বলতে থাকে। নাবালকের এ হেন আচরণে আশঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। ডাকা হয় পুলিশ, খবর দেওয়া হয় দমকলেও। পৌঁছে যান পঞ্চায়েত সদস্যরাও।
এক সময় নাবালক ঘর থেকে দাহ্য পদার্থ ছুড়তে থাকে। তখনই দমকল কর্মীরা ঘরের মধ্যে জল চার্জ করতে শুরু করে। যাতে আগুন না লাগে। অন্যদিকে, ঘরের জাফরি দেওয়া জানালা ভেঙে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন সপ্তগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য এবং পুলিশ।
অনেক বোঝানোর পর নাবালক শেষে বলে তার দুই লক্ষ টাকা ধার আছে।বাইরে বেরোলে তাকে মারধর করা হবে। কিছুতেই কিছু হচ্ছে না দেখে তাকে প্রলোভন দেওয়া হয় তার গাড়ির পেট্রোল ভরার জন্য ২০০ টাকা দেওয়া হবে। এই কথা শুনে দরজা খুলে বেরিয়ে আসে নাবালক। সে সময়েও নাবালক হাতে একটা চপার ধরেছিল বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। যদিও পুলিশের তৎপরতায় বিপদ এড়ানো সম্ভব হয়।
তৈরিই ছিল পুলিশ। নাবালক ঘর থেকে বেরোতেই তাকে জাপটে ধরে হাত থেকে ছুরি নিয়ে নেওয়া হয়। বাঁশবেড়িয়া মিল ফাঁড়ির ইনচার্জ সুজিত রায় নাবালককে ফাঁড়িতে নিয়ে যান। প্রাথমিক অনুমান, সাংঘাতিক মানসিক চাপে এমন অস্বাভাবিক আচরণ নাবালকের। পুলিশের তরফে নাবালককে চিকিৎসকের কাছে কাউন্সেলিংয়ের জন্য নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।