সূর্যকান্ত কুমার, কালনা
একজনের মুদির দোকান। অন্য জন রাজমিস্ত্রি। দুই বন্ধু মিলে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের আদলে বানিয়ে ফেলেছেন রথ। শুক্রবার পথে নামবে কালনার সঞ্জয় মজুমদার আর আজাদ শেখের তৈরি সেই রথ। সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিতে এই রথ নিয়ে গোটা কালনা শহর ঘোরার ইচ্ছা দুই বন্ধুর।
কালনার লক্ষ্মণপাড়ায় একটি পাঠাগারের উল্টো দিকে মুদির দোকান সঞ্জয়ের। সেখানে নিয়মিত আসা–যাওয়া বন্ধু আজাদের। একদিন খবরের কাগজে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের ছবি দেখে দু’জনে ঠিক করেন, ওই মন্দিরের আদলে তাঁরা রথ তৈরি করবেন।
সেই মতো কাজের ফাঁকে সময় বার করে সঞ্জয়ের বাড়িতে চলতে থাকে রথ বানানোর কাজ। তাতে যোগ দেয় কয়েকজন কিশোর–কিশোরীও। হাতে হাত লাগিয়ে এক মাসের পরিশ্রমে কাঠ, পিচবোর্ড, প্লাইউড আর থার্মোকল দিয়ে তৈরি করে ফেলা হয়েছে রথ।
সঞ্জয় বললেন, ‘রথ তৈরির পেছনে দুটো উদ্দেশ্য কাজ করেছে। একটা হলো, আমার নিজের মেয়ে বা অন্য অল্পবয়সী ছেলেমেয়ের মধ্যে মোবাইলের প্রতি আসক্তি অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছে।
তাদের কোনও সৃজনশীল কাজে যুক্ত করা গেলে সেই আসক্তি যদি কিছুটা কমে। তাই রথ তৈরির কাজে ওদের যুক্ত করেছিলাম। আর জাতপাত, ভেদাভেদ আমরা নিজেরাই সৃষ্টি করেছি। একসঙ্গে পথ চলাতেই তো আনন্দ। ছোটরা সেটাও শিখল। আজাদেরই রথ তৈরির উৎসাহ ছিল বেশি।’
আজাদ বললেন, ‘রথ তৈরি করে ভাল লাগছে। আরও ভাল লাগবে যদি রথের দিন পথে আমাদের রথ দেখে সবার ভাল লাগে।’ সঞ্জয়ের কিশোরী মেয়ে নন্দিতা বলল, ‘পিচবোর্ড কাটা আর রঙ করার কাজ আমরাই কয়েকজন মিলে করেছি। এই কদিন আর ফোন নিয়ে সময় কাটাতে ভাল লাগেনি।’