প্রথমবারের জন্য রথের চাকা গড়াবে দিঘায়। আর সেই উপলক্ষে উপচে পড়েছে ভক্তদের ভিড়। বাংলার নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের প্রথম রথযাত্রার সাক্ষী থাকতে দিঘা পৌঁছে গিয়েছেন কাতারে কাতারে মানুষ। ফলে রাতারাতি দিঘার পর্যটন ব্যবসায় জোয়ার এসেছে। হোটেলে রুম অমিল। মোটা টাকা দিয়ে শেষ মুহূর্তে রুম বুক করতে হচ্ছে পর্যটকদের। উৎসব এবং উইকএন্ডে এই আকাশছোঁয়া হোটেল ভাড়া নিয়ে জমা পড়ছে বিস্তর অভিযোগ।
গত ৩০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হয় দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের। ১২ শতাব্দী ঐতিহ্যবাহী পুরীর জগন্নাথধামের অনুকরণে এই মন্দির তৈরি হয়েছে। জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার বিগ্রহ পুজো হচ্ছে এখানেও। তবে পুজোর আচার এবং রীতিনীতিতে দুই মন্দিরের মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক। আর সেই মন্দিরের দর্শন করতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন ভক্তরা। যদিও হোটেল ভাড়া দেখে কার্যত সংজ্ঞা হারাচ্ছেন তাঁরা।
বসু গ্রুপ অফ হোটেলের ম্যানেজার তমাল বসু বলেন, 'ডিলাক্স রুমের ভাড়া ২ হাজার থেকে একলাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭০০ টাকা প্রতি রাত। উইকএন্ডে সেটাই হয়ে যাচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ টাকা।' পর্যটকদের অভিযোগ, কোথাও দ্বিগুণ তো কোথাও তিনগুণ বেশি ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। অ্যাডভান্স বুকিং করা থাকলেও অতিরিক্ত চার্জ নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে দিঘায় রথযাত্রা উৎসবে যাওয়ার প্ল্যান করেও শেষ পর্যন্ত বাতিল করে দিচ্ছেন কেউ কেউ।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও হোটেল ভাড়ায় নজর রাখা হয়েছিল। অযথা যাতে হোটেলের ভাড়া না বাড়ানো হয়, তা আর্জি জানানো হয়েছিল। পর্যটক এবং হোটেল ব্যবসায়ীরাও রাজ্য সরকারের এই আর্জিকে সাধুবাদ জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মাফিক দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনও ওভার চার্জিং রুখতে বিশেষ বন্দোবস্ত করেছে। পাহাড় প্রমাণ অভিযোগের জেরে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে দিঘা হোটেল অ্যাসোসিয়েশন। প্রত্যেক হোটেলকে ন্যয্য ভাড়া নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, 'হোটেল ভাড়া নিয়ে পর্যটকদের অভিযোগ ভুল নয়। অনেক হোটেলই মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে।' তিনি জানিয়েছেন, এই মর্মে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে একটি মিটিং করা হয়েছে। যেখানে ন্যয্য হোটেল ভাড়া নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, 'পর্যটকরাই আমাদের কাছে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। ওভার চার্জিং হলে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করব।'
রথযাত্রায়, শুক্রবার দিঘায় এক লক্ষেরও বেশি মানুষের জনসমাগম হওয়ার আশা প্রশাসনের।