• পেরোল ডিএ-র সময়সীমা, মামলার প্রস্তুতি
    আনন্দবাজার | ২৭ জুন ২০২৫
  • কর্মচারী মহলে আশঙ্কা-উদ্বেগ ছিলই। তা কার্যত সত্যি করে বৃহস্পতিবার ঘোষণা হল না সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে বকেয়া ডিএ-র একাংশ দেওয়ার কাজ। স্বাভাবিক ভাবেই এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে কর্মচারীদের একাংশের মধ্যে। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় আদালত অবমাননা মামলার প্রস্তুতি শুরু করেছে মামলাকালী কর্মচারী সংগঠনগুলি। যদিও, সরকারি ভাবে না হলেও, রাজ্য প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, আজ, শুক্রবার পর্যন্ত ডিএ দেওয়ার সময় রয়েছে।

    গত ১৬ মে অন্তর্বর্তী রায়ে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, ছ’সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া ডিএ-র অন্তত ২৫% মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। মামলাকারী সংগঠনগুলির দাবি, সেই সময়সীমা শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবারই। গত কয়েক সপ্তাহে বাজার থেকে বেশ কয়েক হাজার কোটি টাকা ধার করেছিল রাজ্য সরকার। তাতে অনেকের মনে হয়েছিল, এই ধার হয়ত ডিএ মেটানোর স্বার্থেই। কিন্তু এতদিনে তেমন কোনও প্রতিফলন রাখেনি নবান্ন। এমনকি, ডিএ নিয়ে সরকার কী ভাবছে, তা নিয়ে মুখে কার্যত কুলুপ ছিল প্রশাসনের শীর্ষমহলের। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী দিঘা সফরকালীন আচমকাই সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন বিকেলে। ফলে কর্মচারী মহলেঅনেকের মনে হয়েছিল, এ বার বুঝি ঘোষণা হবে ডিএ। কিন্তু সে পথে হাঁটেননি মুখ্যমন্ত্রী।সাংবাদিক বৈঠক হয় নির্বাচনী প্রক্রিয়া সংক্রান্ত বিষয়ে। সেই সাংবাদিক বৈঠকে ডিএ প্রসঙ্গে একটি শব্দও আলোচিত হয়নি। ফলে কর্মীদের মধ্যে চর্চা আরও তীব্র হয়েছে—তবে কি রাজ্য সরকার আদালত অবমাননার মামলাকে স্বাগত জানাচ্ছে! সংশ্লিষ্ট একাংশের যুক্তি, এতে শুনানি ইত্যাদি আইনি প্রক্রিয়ায় আরও সময় খরচ হবে। স্বাভাবিক ভাবেই পিছিয়ে যাবে ডিএ দেওয়ার কাজ।

    এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য দফতরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেন, “পে-কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা, রাজ্যের রিভিশন পিটিশন করতে যাওয়া— এগুলোর মধ্যে কি মনে হচ্ছে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টের রায় মানতে চাইছে? রাত ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তবে উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) যদি ভাবেন, যে কায়দায় বাংলাটা চালান, সে ভাবে সুপ্রিম কোর্টও চালাবেন, তা হলে ভুল করবেন।”

    তবে এ দিনই সময়সীমা শেষ হওয়ায় কোমর বাঁধতে শুরু করেছে ডিএ মামলাকারী কর্মচারী সংগঠনগুলি। কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়ের সভাপতি শ্যামল কুমার মিত্র এবং সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “আদালত অবমাননার মামলা কেন হবে না, তা নিয়ে আইনি নোটিস দেওয়া হবে মুখ্যসচিব এবংঅর্থসচিবকে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তর না পেলে সর্বোচ্চ আদালতেই এই মামলা হবে। ১৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট খুলবে।”

    অপর মামলাকারী সংগঠন রাজ্য কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, “প্রায় ১০ বছর ধরে এই সরকার ট্রাইব্যুনাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত একটাই প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবকে আইনি নোটিস দেওয়া হবে অবমাননা মামলার আগে। সময় বেঁধে দেওয়া হবে, যাতে কালবিলম্ব না করে সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী রায় মেনে ২৫ শতাংশ ডিএ মিটিয়ে দেয়।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)