চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
কোচবিহার শহরে হীতেন্দ্রনারায়ণ রোডে রয়েছে প্রায় শতবর্ষ পুরনো জগন্নাথ মন্দির। যা পান্ডাবাড়ির জগন্নাথ মন্দির নামে পরিচিত। কোচবিহার মদনমোহন বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই এই মন্দিরটি রয়েছে। কথিত আছে, মহারাজাদের আমলে পুরীর নিমকাঠ দিয়ে এই দারু বিগ্রহ তৈরি হয়।
রাজ আমলে পুরীর বহু পান্ডা এই মন্দির দেখাশোনা করতেন। সেই সময়ে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসতেন এই মন্দিরে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই পান্ডারা আজ আর এখানে নেই। কোচবিহারের একটি ক্লাবের তত্ত্বাবধানে এখন পুজিত শতবর্ষ পুরোনো মন্দিরে জগন্নাথ। কোচবিহারের হীতেন্দ্রনারায়ণ রোডে হচ্ছেন জগন্নাথ।
এই মন্দিরে রথযাত্রা নেই। তাই হয়তো প্রচার এবং জৌলুষ অনেকটাই কম। কোচবিহারের পুরনো মানুষজন জানান, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের অদূরে কোচবিহারের মহারাজাদের প্রাসাদ ছিল। সেই সুবাদেই মহারাজাদের প্রাসাদে পুরীর পান্ডাদের নিত্য যাতায়াত ছিল।
আর সেই সংযোগেই হয়তো একটা সময়ে এখানে এই মন্দিরটি গড়ে ওঠে। যদিও বর্তমানে সেই প্রাসাদ এখন দখল হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
কোচবিহারে সেই সময়ে প্রায় ১০০ পান্ডা বসবাস করতেন। এখন কোচবিহারের চালতাতলা যুব সংঘের তত্ত্বাবধানে মন্দিরটি রয়েছে। পান্ডারা একে একে চলে গেলেও এই ক্লাবের উদ্যোগেই নিত্য পুজো হয় জগন্নাথ দেবের।
পাশাপাশি রথযাত্রার দিন বিশেষ পুজোও হয়। কোচবিহারের চালতাতলা যুব সংঘের সম্পাদক রাজদীপ ঘোষ বলেন, ‘ইতিহাস সে ভাবে কারও জানা নেই। তবে রাজ আমলে একেবারে পুরীর নিম কাঠ দিয়েই এই জগন্নাথ বিগ্রহ তৈরি হয়েছিল বলে পুরোনো লোকজনদের মুখে শুনেছি। বহু পান্ডারা এখানে থাকতেন। রঘুনাথ মহাপাত্র নামে শেষ পান্ডা এখানে ছিলেন। তিনি চলে গেলে এই মন্দিরের দায়িত্ব নেয় ক্লাব।’
এই মন্দিরে বলরাম এবং সুভদ্রা নেই। তবে তাঁদের বেদি করা রয়েছে। ক্লাবের ফান্ড দিয়ে পরে বলরাম এবং সুভদ্রার বিগ্রহ বসানোর ভাবনা রয়েছে।