খেজুরের বীজের উপর তৈরি জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা, ধুমধাম করে পুজো
প্রতিদিন | ২৭ জুন ২০২৫
অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: উপকরণ বলতে তিনটি খেজুরের বীজ, রঙ তুলি আর সঙ্গে শিল্পীর কল্পনা ও হাতের যাদু। তাতেই ১.৫ সেন্টিমিটার বীজের উপর তৈরি জগন্নাথদেব, বলরাম ও শুভদ্রা। মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরচকের শিল্পী সন্দীপ গুঁই এলাকায় অতি পরিচিত নাম। তাঁর এই জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছে। শুধু তাই নয়, এই জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার পুজো হল মহা সমারোহে। ইতিমধ্যেই এই শিল্পীর কাজ ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডের তালিকায় আছে। ২০২৪ সালে রেশম সুতো দিয়ে কালী প্রতিমা তৈরি করে তিনি ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডের তালিকায় নাম তুলেছিলেন।
কিন্তু খেজুরের বীজের উপর জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে তৈরির ভাবনা কীভাবে এল শিল্পীর মনে? বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বাড়িতে বসে খেজুর খাচ্ছিলেন। মাথার মধ্যে কিছু আঁকার ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছিল। তারপরেই এই সিদ্ধান্ত হয়। সন্দীপ গুঁই বলেন, “বৃহস্পতিবার সকালে বসে খেজুর খাচ্ছিলাম। বাইরে তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টির শব্দে মনের মধ্যে কেমন একটা ছবি তৈরির ভাবনা জাগছিল। তখনই পাশে রাখা খেজুরের বীজগুলির উপর নজর পড়ে। মনে পড়ে শুক্রবারের রথযাত্রার কথা। সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে তিনটে খেজুর ছাড়িয়ে বীজ বের করে নিলাম। আর কল্পনায় থাকা জগন্নাথ, বলরাম, শুভদ্রার পৃথক পৃথক ছবি একে ফেললাম ওই বীজ তিনটের উপর।” এদিন ওই তিন মূর্তি বাড়িতে রেখে পুজো হয় বলে খবর।
বহু দিন ধরে শিল্পী সন্দীপ গুঁই বিভিন্ন ধরনের জিনিস দিয়ে মূর্তি ও ভাস্কর্য তৈরি করেছেন। জাতীয় ও রাজ্যস্তরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতাতেও তিনি অংশ নিয়েছেন। বাড়িতে রয়েছে বহু পুরস্কার, সম্মান। সন্দীপ গুঁইয়ের জন্ম সিল্কের আঁতুরঘর ইসলামপুর চকে। সে কারণে শিল্পকর্মে বার বার ব্যবহৃত হয়েছে রেশম সামগ্রী। অতীতে মাটি, পাট, কাগজ, কাগজের মণ্ড, নারকোলের ছোবা ও খোলা ইত্যাদি দিয়ে বানিয়েছেন দুর্গা প্রতিমা, গণেশ, কালী, সরস্বতী। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু-সহ অন্যান্য দেশপ্রেমিকদের মূর্তিও তিনি তৈরি করেছেন। এর আগে দেড় সেন্টিমিটার ঝিনুকের উপরে রং, তুলি দিয়ে তিনি তৈরি করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি।