• মল্লরাজার আমলে তৈরি হয় পিতলের রথ, ৩৫১ বছরের রথযাত্রা নিয়ে বিপুল উন্মাদনা বিষ্ণুপুরে
    প্রতিদিন | ২৭ জুন ২০২৫
  • অসিত রজক, বিষ্ণুপুর: ১৬৬৫ খ্রীষ্টাব্দে মল্লরাজাদের আমলে তৈরি হয়েছিল পিতলের রথ। একই নিয়মে ৩৫১ বছরের পুরনো রীতিনীতি মেনেই শুক্রবার সকালে বিষ্ণুপুর মাধগঞ্জে রথযাত্রা উৎসব পালন করা হল। তবে এই রথে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা সওয়ার হন না। রথে সওয়ার হন রাধা মদন গোপাল ঠাকুর জিউ। বিষ্ণুপুরের রানি শিরোমণি দেবীর ইচ্ছা অনুযায়ী এই রথে অধিষ্ঠান করেন রাধা মদন গোপাল ঠাকুর জিউ।

    মাধবগঞ্জের ১১ পাড়া রথযাত্রা উৎসব ঘিরে বহু ভক্ত সমাগম হয়। এলাকার বাসিন্দাদের পাশাপাশি দূরদূরান্তের পুণ্যার্থীরা ভিড় করেন। বিষ্ণুপুরের মল্লরাজ শহরের মাধবগঞ্জের রানি শিরোমণি দেবীর ইচ্ছা অনুযায়ী পাথরের পাঁচ চূড়া মন্দির নির্মাণ করেন। মন্দিরের বিগ্ৰহ রাধামদন গোপাল ঠাকুর জিউ। রথের দিন সকালে মন্দির থেকে হরিনাম সংকীর্তনের মধ্য দিয়ে রাধামদন গোপাল ঠাকুরকে আনা হয়। মন্দিরের অনুকরণেই এই রথ তৈরি করা হয়েছিল। সেখানেই রাখা হয় রাধা মদন গোপাল ঠাকুর জিউ। এই রথযাত্রা উৎসব এখন ১১ পাড়ার রথ ষোলআনা কমিটির পরিচালনা করেন। এদিন সকাল থেকেই মন্দির প্রাঙ্গণে ভক্ত সমাগম হয়। রথযাত্রা উপলক্ষে এলাকায় নিরাপত্তার কড়াকড়িও দেখা যায়।

    মাধবগঞ্জ ১১ পাড়া রথযাত্রা ষোলআনা কমিটির সম্পাদক তথা বিষ্ণুপুর পুরসভার পুরপ্রধান গৌতম গোস্বামী বলেন, “মানুষের আবেগ, ভালোবাসার পাশাপাশি ঐতিহ্যের ছোঁয়াও রয়েছে। এই রথযাত্রা উপলক্ষে সারা বছর ধরে বিষ্ণুপুরের মানুষ তাকিয়ে থাকেন। রথের রশিতে টান পড়ার অপেক্ষায় থাকেন সকলে।” টানা অনুষ্ঠান প্রসাদ, ভোগরান্না চলে এই সময়। এই বিশেষ কয়েক দিন চার হাজারেরও বেশি মানুষ রোজই মহাপ্রসাদ গ্রহণ করেন। স্থানীয় ভক্তবৃন্দ রুপালি ঘোষ, মধুমতি পাল-সহ বহু স্থানীয় বাসিন্দা উপস্থিত। তাঁদের কথায়, “সকাল ছ’টায় মন্দিরের মধ্যে যাওয়া। নাম সংকীর্তন চলতে থাকে। রাধা মদন গোপাল ঠাকুর জিউকে নিয়ে যাওয়া হয় রথে।” রথ থেকে উল্টোরথ পর্যন্ত ন’দিন চলে উৎসব ও অনুষ্ঠান। এই সময় বহু আত্মীয়স্বজনও আসেন এলাকায়। সকলকেই মহাপ্রসাদ বিলি করা হয়।
  • Link to this news (প্রতিদিন)