খুঁটিপুজো হল দুর্গাপুজোর একটি আচার যা রথযাত্রার দিন বা তার কাছাকাছি সময়ে অনুষ্ঠিত হয়। মণ্ডপ তৈরির জন্য খুঁটি পোঁতার আগে এই পুজো করা হয়। খুঁটিপুজোর ধারনাটি এসেছে বহু পুরোনো এক রীতি থেকে। থিমের পুজোর বাড়বাড়ন্তের আগে বনেদি বাড়ির ঠাকুর দালানে গড়া হত প্রতিমা। রথযাত্রার শুভ দিনে, মাটির প্রতিমার কাঠের কাঠামোকে পুজো করার চল ছিল। এই পুজোই কাঠামো পুজো বলে পরিচিত। তারপর সেই কাঠামোর উপরে একটু একটু মাটি লেপে গড়ে উঠত দুর্গা প্রতিমা। সেই থেকেই এই খুঁটিপুজোর সূচনা।
শাস্ত্র মতে এই দিনটিকে দুর্গাপুজোর আনুষ্ঠানিক সূচনা হিসাবেও ধরা হয়। এই পুজো করে দেবীর মূর্ত প্রতীককে মণ্ডপে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। খুঁটিপুজোর মাধ্যমে মণ্ডপ এবং দেবীর মূর্তিকে সুরক্ষা প্রদান করা হয়, যাতে কোনও অশুভ শক্তি তাদের ক্ষতি করতে না পারে।
রথযাত্রার পূণ্য তিথিতে জেলার বড় বাজেটের পুজো মন্ডপ তৈরি শুরু হলো খুঁটিপুজোর মধ্যে দিয়ে। হলদিয়ার বাসুদেবপুর ক্ষুদিরাম স্মৃতি সংঘের এ বার ৩৭তম বর্ষ। তাঁদের এ বছরের দুর্গাপূজার মন্ডপের থিম 'চাইনা হতে উমা'। ক্লাবের সদস্য আরমান ভোলা জানান, এবছর তাঁদের পুজোর বাজেট ৬০ লক্ষ টাকা। খুঁটি পুজো উপলক্ষে এক হাজার চারাগাছ ও ছাতা এলাকার মানুষের হাতে তুলে দেওয়ার হয়েছে।
হাজরামোড় মৈত্রীভূমি ক্লাবের এবছরের থিম ‘বিষ্ণুর স্বর্গে, দুর্গতিনাশিনী দুর্গে’। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে এ বছর তাদের পুজোর বাজেট ৪০ লক্ষ টাকা। চৈতন্যপুর নবতারা ক্লাবের পুজো এবছর ৩০ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। আকর্ষণীয় থিম থাকবে তাদের মন্ডপে। ক্লাবের তরফে জানানো হয়েছে, খুঁটি পুজো উপলক্ষ্যে এদিন এলাকার ১০০ জনের হাতে চারাগাছ তুলে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চৈতন্যপুর বাজার এলাকা সাফাই অভিযানের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
মহিষাদল যুব সাংস্কৃতিক সংস্থার পুজো এবছর ৪৯ তম বর্ষে পড়েছে। সংস্থার তরফে ছবিলাল মাইতি জানান, প্রতি বছরের মতো এ বছরও প্রতিমা ও মণ্ডপ সজ্জায় থাকবে চমক। এবছরে তাঁদের পুজোর বাজেট ৩০ লক্ষ টাকা।
মহিষাদলের ইচ্ছাপুরের প্রতিমা শিল্পী সুভাস জানা জানান, তিনি তিন দশক ধরে প্রতিমা গড়ছেন। তাঁর তৈরি প্রতিমা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাড়ি দিয়ে থাকে। ইতিমধ্যেই পঞ্চাশের বেশি প্রতিমা অর্ডার হয়েছে। বেশ কিছু প্রতিমা নির্মাণের কাজও হয়ে গিয়েছে।