• চিৎপুরে এদিন যেন ছিল দুর্গাপূজা, শিল্পীকে সামনে থেকে দেখতে এবং বায়না করতে হল কাউন্টারে কাউন্টারে ভিড়...
    আজকাল | ২৮ জুন ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: রথযাত্রার দিনটা যেন চিৎপুরের যাত্রাপাড়ায় অষ্টমীর মতো। ব্যস্ততা একেবারেই তুঙ্গে। কারণ, এদিন থেকেই শুরু হয় পালা বুকিং বা বায়নার কাজ। যাত্রাপাড়ার প্রতিটি অফিসে এদিন উপস্থিত থাকেন নায়ক, নায়িকা-সহ অন্যান্য শিল্পীরা। হল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। হল গল্প, গান, আড্ডা। সেইসঙ্গে হল একের পর এক বুকিং। এ প্রসঙ্গে কলকাতা যাত্রা কর্মী ইউনিয়নের সম্পাদক হারাধন রায় বলেন, 'মোট ৪৮টি দল আছে। সব দলের পালারই বায়না হয়েছে। বায়নার সময় অল্প কিছু টাকা এবং অনুষ্ঠানের আগে বাকি টাকা দেওয়া হয়।' 

    এই দিনের বিশেষত্ব বোঝাতে গিয়ে যাত্রা শিল্পীদের ইউনিয়ন সংগ্রামী যাত্রা প্রহরী'র অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক অনুভব দত্ত জানান, 'একটা সময় ছিল যখন এই দিনে শিল্পীরা যে যেই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত সে সেই সংস্থার অফিসেই যেতেন। কিন্তু গত বেশ কয়েকবছর ধরে এইদিনে সকলেই বাগবাজার ফণিভূষণ বিদ্যাবিনোদ যাত্রা মঞে আসেন। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি পালা বুকিংয়ের জন্য তৈরি করা হয়েছিল ছোট ছোট কাউন্টার। এখানকার পর্ব মিটিয়ে তারপর শিল্পীরা গিয়েছেন যার যার সংস্থায়।' 

    একটা সময় ছিল যখন ঐতিহাসিক বা পৌরাণিক পালার সঙ্গে মঞ্চস্থ হত সামাজিক পালা। বর্তমানে শুধুই তৈরি হয় সামাজিক পালা। যা বলতে গিয়ে হারাধন রায় বলেন, 'চিৎপুরে এখন আর পৌরাণিক বা ঐতিহাসিক পালা হয় না। শুধুই সামাজিক পালা মঞ্চস্থ হয়।'  মূলত পূজা উপলক্ষে এই বুকিংগুলি হয় দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার জন্য। হারাধন জানিয়েছেন, এই সময় যে বুকিংটা হয় সেটা শুধুমাত্র দক্ষিণবঙ্গের জেলা থেকেই আসে। শীত পড়লে বা ডিসেম্বর মাসে শুরু হয় উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির বুকিং।

    মাঝে বেশ কিছুদিন দুর্দশায় কাটিয়েছে যাত্রা। একটা ছিল যখন পূজা বা অন্যান্য পালা পার্বণে যাত্রাই ছিল সেরা আকর্ষণ। সেই জনপ্রিয়তায় বেশ ভাঁটা পড়েছিল। তবে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলার এই প্রাচীন সংস্কৃতি। অনুভব দত্ত জানান, যাত্রার আবেগ আবার ফিরে এসেছে। ফের যাত্রা নিয়ে শুরু হয়েছে সেই মাতামাতি।
  • Link to this news (আজকাল)