• ‘গোপনাঙ্গে ক্ষত, গলায় কামড়ের দাগ’, কসবা ল’ কলেজের নির্যাতিতার মেডিক্যাল রিপোর্টে নৃশংস নির্যাতনের চিহ্ন
    এই সময় | ২৮ জুন ২০২৫
  • গোটা শরীরে একাধিক ক্ষত। কসবা ল’ কলেজের নির্যাতিতার মেডিক্যাল রিপোর্টে মিলেছে এমনই তথ্য। ফের কলকাতার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্দরেই নৃশংস নারী নির্যাতনের অভিযোগ। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের নারকীয় ঘটনার বছর ঘুরতে না ঘুরতেই এ বার অপরাধের অকুস্থল দক্ষিণ কলকাতার ল’ কলেজ। ছাত্রীকে কলেজে আটকে রেখে গণধর্ষণের অভিযোগ প্রাক্তন ছাত্র এবং কলেজেরই অস্থায়ী কর্মী ও দুই বর্তমান ছাত্রের বিরুদ্ধে। ছাত্রীর মেডিক্যাল টেস্টের রিপোর্টেও মিলেছে নৃশংস নির্যাতনের চিহ্ন বলে খবর।

    অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোর পর ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে মেডিক্যাল টেস্ট হয় নির্যাতিতার। সেই রিপোর্টে লেখা রয়েছে একাধিক ক্ষতের কথা। ন্যাশনাল মেডিক্যাল সূত্রে খবর, নির্যাতিতার গলায় কামড়ের দাগ মিলেছে। বুকে রয়েছে আঘাতের চিহ্ন। গোপনাঙ্গেও রয়েছে সামান্য ক্ষত। এছাড়া গোটা শরীরের নানা অংশে বিদ্যমান আঘাতের চিহ্ন। রয়েছে নখের আঁচড় ও কালশিটের দাগ। জানা গিয়েছে, কী ভাবে কলেজের ভিতরে আটকে রেখে অত্যাচার করা হয়েছে, তাও চিকিৎসকের কাছে বিস্তারিত জানিয়েছেন নির্যাতিতা পড়ুয়া।

    ২৫ জুন, বুধবার সন্ধ্যার পরে কলেজের মধ্যেই দফায় দফায় ওই ছাত্রীকে হেনস্থা করার পর আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। প্রধান অভিযুক্ত প্রাক্তন ছাত্র মনোজিৎ মিশ্র বর্তমানে ওই কলেজেরই অস্থায়ী কর্মী। দুই বর্তমান ছাত্রও এই ঘটনায় জড়িত। এই তিন অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করেছে কসবা থানার পুলিশ। আলিপুর আদালত ওই তিন অভিযুক্তকে চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।

    লিখিত অভিযোগে ছাত্রী জানিয়েছেন, ধর্ষণে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তাঁকে। তিনি তা নাকচ করেন। লিখিত অভিযোগ অনুসারে, বুধবার সন্ধেয় ইউনিয়ন রুম থেকে বেরোনোর সময় মনোজিৎ মিশ্র ওই ছাত্রীকে বাধা দেয়। ধর্ষণে সহযোগী দুই ছাত্র মনোজিতের ইশারায় বাইরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। সে সময়ে ওই ছাত্রীকে শৌচাগারের কাছে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে মনোজিৎ। বাধা দেওয়ার অনেক চেষ্টা করেন ওই ছাত্রী। প্যানিক অ্যাটাক, শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায় তাঁর। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাকুতি-মিনতি করলেও তাতে পাত্তা দেয়নি মনোজিৎ। বাকি দুই অভিযুক্তকে দিয়ে ইনহেলার আনিয়ে ছাত্রীকে দেয় সে। সামান্য সুস্থ বোধ করতেই ফের আক্রমণ।

    নিগৃহীতা ছাত্রী জানিয়েছেন, বাধা দিলে প্রেমিককে খুন করে দেওয়া হবে এবং বাবা-মাকে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয় মনোজিৎ। এছাড়াও জোর করে তাঁকে বিবস্ত্র করে সেই ভিডিয়ো এবং ধর্ষণের ভিডিয়ো রেকর্ড করে বাকি দুই ছাত্র। ওই রেকর্ডিং ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখানো হয় নির্যাতিতা। বাধা দেওয়ায় আঘাত করা হয়। এমনকী হকি স্টিক দিয়ে মারার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগে জানিয়েছিলেন নির্যাতিতা। তাঁর মেডিক্যাল টেস্টেও উঠে এসেছে গোটা শরীরে নৃশংস নির্যাতনের একাধিক চিহ্ন।

  • Link to this news (এই সময়)