‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট ব্যাঙ্ক’ করার স্বপ্ন নিয়ে এগচ্ছে সাতমাইল সতীশ ক্লাব
বর্তমান | ২৮ জুন ২০২৫
সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, কোচবিহার: ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট আর সেভাবে দেখা যায় না। সেই জায়গায় স্থান করে নিয়েছে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানের বড় সাইজের পাঁঠা। আর বাংলার কালো পাঁঠা বা ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট যেন অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। সেই অভাব পূরণ করতেই এবার উদ্যোগী হয়েছে কোচবিহারের সাতমাইল সতীশ ক্লাব ও পাঠাগার। গ্রামীণ অর্থনীতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট বা কালো কুচকুচে ছাগল পালনের প্রসার ঘটাতে এগিয়ে এসেছে তারা। এজন্য গ্রামীণ মহিলাদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দু’টি করে ছাগল দেওয়া হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার মাথাভাঙা-২ ব্লকের ভোগমারা গ্রামে ১০ জন মহিলাকে ২০টি ছাগল দেওয়া হয়েছে। একএকটি ছাগলের যতগুলি করে বাচ্চা হবে তা পালিকা ও সাতমাইল সতীশ ক্লাব ও পাঠাগারের মধ্যে সমান ভাগ হবে। সাতমাইল সতীশ ক্লাব ও পাঠাগার সেই ছাগল আবার নতুন পালিকাকে প্রদান করবে। আর যদি পাঁঠা হয় সেটি সাতমাইল সতীশ ক্লাব নেবে। সেটিও প্রজননের জন্য কৃষকদের দেওয়া হবে। পরবর্তীতে বিক্রি করে টাকা অর্ধেক ভাগাভাগি হবে। আগামী একবছর কোচবিহার জেলাজুড়ে এই প্রকল্প চলবে। প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর ও উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এই কাজে সহায়তা করবে বলে সংগঠনের দাবি। সাতমাইল সতীশ ক্লাব ও পাঠাগারের সম্পাদক অমল রায় বলেন, ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে। তাই আমরা গ্রামীণ এলাকার মহিলাদের এই প্রজাতির ছাগল প্রদান করছি। আমাদের লক্ষ্য ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট ব্যাঙ্ক বানানো। মহিলারা ছাগল লালনপালন করবেন। বাচ্চা হলে তা সমান ভাগ হবে। আমরা যে ভাগটি পাব তা আবার অন্যদের দিয়ে দেব। এভাবে প্রকল্পটি এগবে। আমাদের লক্ষ্য একবছরে ১০০ পরিবারকে ২০০ ছাগল প্রদান করা। পরবর্তীতে ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট স্টোর করা হবে। সেখান থেকে মাংস পাওয়া যাবে।গ্রামীণ অর্থনীতিতে চিরকালই পশুপালনের আলাদা মাত্রা রয়েছে। বিশেষ করে মহিলারা এই কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। সাতমাইল সতীশ ক্লাব এই কাজে নামার আগে রীতিমতো সমীক্ষা করেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, মহিলারা যদি বাড়িতে ছাগল পালন করেন তাহলে তাঁরাও অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হতে পারেন। আবার এর মাধ্যমে ব্ল্যাক বেঙ্গল গোটের মতো প্রজাতিকেও রক্ষা করা সম্ভব হবে। এর প্রসার ঘটলে আগামীদিনে সহজেই এই সুস্বাদু মাংস পাতে মিলবে। কারণ পাঁঠার মাংসের ঝোল অথবা কষা, সঙ্গে গরম গরম ভাত, দুপুরের আহারে বাঙালির পাতে এই পদ থাকলে আর কি লাগে! নিজস্ব চিত্র