নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: শুক্রবার নতুন রথে চেপে কোচবিহারের প্রাণেরঠাকুর মদনমোহন মাসির বাড়ি পৌঁছলেন। আর মদনমোহনের এই রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে ভক্তদের আবেগ, উল্লাস ছিল বাঁধভাঙা। এদিন সকাল সাড়ে ৭টায় মদনমোহনের স্নানযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এরপরেই মদনমোহনকে কাঠামিয়া মন্দিরে নিয়ে আসা হয়। আর মদনমোহনের সিংহাসনে আরোহন করেন ছোট মদনমোহন। কাঠামিয়া মন্দিরে রথ উপলক্ষ্যে মদনমোহনের বিশেষপুজো হয়। সকাল সোয়া ৮টায় সেই পুজো শুরু হয়। সেই সময় থেকেই মদনমোহন মন্দিরে ভক্তসমাগম শুরু হয়ে যায়। বিকেল সোয়া ৪টেয় পুজো ও অঞ্জলি শেষে সাড়ে ৪টেয় মদনমোহন রথে আরোহন করেন। ৪টে ৫৫ মিনিটে মদনমোহনের রথের দড়ি টানা হয়। জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা রথের দড়িতে টান দেন। রথ উপলক্ষ্যে কোচবিহারের মদনমোহন মন্দির চত্বরকে আগে থেকেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার রথের বাজেট ৩ লক্ষ ১৪ হাজার টাকা। প্রায় ছ’লক্ষ টাকা ব্যয়ে নতুন রথ বানানো হয়েছে এবারে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, রথে চেপে মদনমোহন চিরাচরিত পথ ধরে গুঞ্জবাড়িতে পৌঁছন। সেখানে সাত দিন থাকার পর ৪ জুলাই আবার নিজের মন্দিরে ফিরে যাবেন। এরপর ৭ জুলাই ছোট মদনমোহন শয়ানে চলে যাবেন। তিনি টানা শয়ানে থেকে ১১৮ দিন পর উঠবেন। সেটি হবে উত্থান একাদশী। যা মদনমোহনের রাসযাত্রার আগে। কোচবিহারের মহকুমাশাসক কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মদনমোহনের জন্য এবার নতুন রথ নির্মাণ করা হয়েছে। সেই রথে চেপেই তিনি মন্দির থেকে গুঞ্জবাড়িতে মাসিরবাড়ি গিয়েছেন। জেলাশাসক রথের দড়িতে টান দিয়েছেন। এবার গুঞ্জবাড়িতে মেলা করার জন্য টেন্ডার করা হয়েছিল। নোটিসও করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে কেউ অংশগ্রহণ করেননি। কেন এমনটা হল তা খোঁজ নেওয়া হবে। যাঁরা দোকান দিতেন তাঁদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কোচবিহারে রথ মানেই মদনমোহনের রথযাত্রা। রাজ আমলে শুরু হওয়া এই রথযাত্রার মাহাত্ম্য কোচবিহারবাসীর ভাবাবেগের সঙ্গে জড়িত। তাই রথের দিন হাজার হাজার মানুষ মন্দির চত্বরে ও রাস্তার দু’পাশে জড়ো হয়ে একবার মদনমোহনকে দর্শন ও রথের দড়িতে টান দেন। কড়া পুলিসি নিরাপত্তায় রথ কোচবিহার রাজবাড়ির গেটের সামনে দিয়ে গুঞ্জবাড়িতে পৌঁছেছে। সন্ধ্যায় ঝিরঝিরে বৃষ্টি হলেও রথের আনন্দ উপভোগ করেন সকলেই। নিজস্ব চিত্র