বোলপুরের রথযাত্রা কমিটিগুলিকে দশ হাজার টাকা করে অনুদান, বিতর্ক
বর্তমান | ২৮ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, বোলপুর: রথযাত্রাতেও মিলল সরকারি অনুদান। এতদিন দুর্গাপুজো ও মহরমে সরকারি অনুদান মিলত। এইবারই প্রথম বোলপুরে রথযাত্রা আয়োজক কমিটিগুলি সরকারি অনুদান পেল। শ্রীনিকেতন- শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের (এসএসডিএ) তরফে বোলপুরের ২৫টি রথযাত্রা কমিটিকে শুক্রবার ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি শংসাপত্র ও স্মারকও তুলে দেওয়া হয়। তবে অনুদান দেওয়াকে সরকারি টাকা নয়ছয় বলে বিতর্ক উসকে দিয়েছে বিজেপি। বোলপুরের রেল ময়দান সর্বজনীন দুর্গাপুজো মন্দির প্রাঙ্গণে মা দুর্গার গায়ে মাটি লেপন করার পরেই অনুষ্ঠানটি হয়। এসএসডিএর চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী সহ বোলপুর পুরসভার কাউন্সিলাররা। সরকারি অনুদান পেয়ে খুশি রথযাত্রার আয়োজক কমিটির সদস্যরা। প্রসঙ্গত, যুগের তালে ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় রথযাত্রা উদযাপন ক্রমশ ফিকে হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করছেন অনেকে। তারই প্রেক্ষিতে বোলপুরের পুরনো রথযাত্রা আয়োজক কমিটিগুলিকে উজ্জীবিত করতে এ বছর আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা করে এসএসডিএ। এদিন বোলপুরের অন্যতম পুরনো রথযাত্রা আয়োজক কমিটি সুরুল রথ কমিটি, ভুবনডাঙা ভক্তিবৃক্ষ আশ্রম, ভক্তি বেদান্ত গৌড়ীয় আশ্রম, মকরমপুর রথযাত্রার সমিতি, মহাপ্রভু আশ্রম প্রভৃতিদের হাতে অনুদান তুলে দেওয়া হয়। মন্ত্রীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রথযাত্রা আয়োজক কমিটির সদস্যরা। এদিনের অনুষ্ঠানে দীঘায় পুরীর আদলে মন্দির তৈরির ভূয়সী প্রশংসা করেন সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। তিনি বলেন, এখন পুরীতে গেলে হোটেল মিলবে, কিন্তু দীঘায় কোনও হোটেল ফাঁকা নেই। তাঁবু খাটিয়ে পুণ্যার্থীদের থাকতে হচ্ছে। তবে অনুদান দেওয়ার বিষয়টিকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল। তিনি বলেন, পাঁচ-সাত বছর আগে তো কই দেওয়া হয়নি। আসলে শাসকদল যেভাবে মুসলিম প্রীতি দেখিয়েছে, তাতে হিন্দুরা ওদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সেটা তৃণমূল এখন বুঝতে পারছে। তাই হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে একটু মলম লাগানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। কিন্তু এইভাবে সরকারি টাকা তছরুপ করার অধিকার চন্দ্রনাথবাবুর নেই। কার নির্দেশে এই টাকা নয়ছয় করা হল, জনগণকে তার জবাব দিতে হবে। এইভাবে টাকা বিলি করা সম্পূর্ণ বেআইনি। পাল্টা চন্দ্রনাথবাবু বলেন, বিজেপি শুধু ধর্মের রাজনীতি করে। তাই ওরা কী বলল তাতে কিছু যায় আসে না। ছোট থেকেই রথযাত্রা একটি আবেগ। আগে সং সাজা হতো, এবার যাতে হয়, তার জন্য সামান্য অনুদান দেওয়া হয়েছে। তাতে সবাই খুশি। কারণ, বোলপুরে বহু প্রাচীন রথ কমিটি আছে।