সমবায়ে দেড় কোটি টাকা অনিয়মের ঘটনায় প্রাক্তন ম্যানেজার গ্রেপ্তার
বর্তমান | ২৮ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: গোঘাটের নকুণ্ডা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে দেড় কোটির বেশি টাকা অনিয়মের ঘটনায় প্রাক্তন ম্যানেজারকে গ্রেপ্তার করল গোঘাট থানার পুলিস। ধৃতের নাম বিশ্বজিৎ মালিক। নকুণ্ডার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ গ্রেপ্তারি এড়াতে বারবার স্থান বদল করছিল। কিন্তু, শেষরক্ষা হল না। বৃহস্পতিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থানা এলাকা থেকে তদন্তকারী অফিসাররা তাকে গ্রেপ্তার করেন। থানার এক আধিকারিক বলেন, সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই ধৃত পলাতক ছিল। গত কয়েকদিনে সে একাধিকবার স্থান বদল করে। চন্দ্রকোণা থেকে খড়্গপুর থানা এলাকায় যায়। অবশেষে মোবাইল ট্র্যাক করে ময়না থেকে তাকে পাকড়াও করা হয়। ধৃতকে পুলিস হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করা হবে।
আরামবাগের এসডিপিও সুপ্রভাত চক্রবর্তী বলেন, ধৃত প্রাক্তন ম্যানেজার মূল চক্রী। সে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করেছে পুলিস। মূল অভিযুক্তকে এবার জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য খতিয়ে দেখা হবে। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বজিৎ সহ সমবায়ের চারজনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ দায়ের করেন তৎকালীন পরিচালন বোর্ডের সম্পাদক তপন ঘোষ। তিনি বলেন, পরিচালন বোর্ডের দায়িত্ব নিয়ে দেখা যায়, বিগত বছরগুলিতে সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির কোনও অডিট হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে অডিট করানো হয়। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে দেড় কোটি টাকার কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। তারপরই থানার দ্বারস্থ হই। আমরা চাই, অভিযুক্তদের শাস্তি হোক। পাশাপাশি গরিব মানুষের তছরুপ হওয়া টাকা উদ্ধার করে তা ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
কীভাবে হাতানো হয় এই টাকা? অভিযোগকারী জানিয়েছেন, সেই সময় সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে ভুয়ো লেনদেনের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করা হয়। গ্রাহকরা টাকা জমা দিলে তাঁদের খাতায় লেনদেনের উল্লেখ করা হতো। কিন্তু, সমিতিতে কোনও হিসেব রাখা হয়নি। এছাড়া স্বনির্ভর গোষ্ঠী সহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভুয়ো ঋণ দেওয়ার নামেও টাকা লোপাট করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ঘটনার তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রায় এক মাস আগে ওই সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির অন্যতম অভিযুক্ত কর্মী লক্ষ্মণ মালিক ও সহ কোষাধ্যক্ষ সোমা পালকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে প্রাক্তন ম্যানেজার বিশ্বজিৎকে গ্রেপ্তার করা হয়। হুগলি গ্রামীণ পুলিসের এক আধিকারিক, তদন্তে দেড় কোটিরও বেশি টাকার অনিয়মের তথ্য উঠে আসছে। পুলিস আধিকারিকরা নানা নথিপত্র খতিয়ে দেখছেন। তদন্ত চলছে।