কার্তিক মহারাজকে ঘিরে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে, সহবাস ও গর্ভপাতের অভিযোগ ইস্যু
বর্তমান | ২৮ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: চাকরি দেওয়ার নাম করে সহবাস এবং জোর করে গর্ভপাত করার মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে পদ্মশ্রী কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের হওয়ার পর জেলা জুড়ে তুমুল শোরগোল শুরু হয়েছে। রাজ্য রাজনীতিতেও জোরচর্চা চলছে ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠ’ মহারাজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নিয়ে। অভিযোগকারী মহিলা তাঁর লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে নবগ্রামের ভারত সেবাশ্রম স্কুলের পাঁচতলায় মহারাজ আমাকে ধর্ষণ করে মহারাজ। ওই স্কুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে আমার উপর বারবার শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এই ঘটনায় আমি গর্ভবতী হয়ে যাই। এমনকী ২০১৩ সালের জুন মাস নাগাদ বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে জোর করে আমাকে গর্ভপাত করানো হয়।
এদিকে, ঘটনার ১২ বছর পরে এমন মারাত্মক অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন তোলা শুরু করেছে অনেকেই। তবে নির্যাতিতা মহিলা লিখিত অভিযোগে এটাও জানিয়েছেন, গত ১৩ই জুন তাঁকে মহিলাকে বহরমপুরের জেলখানা রোডে ডাকা হয়। তখন কার্তিক মহারাজ তাঁর দুই অনুগামীকে পাঠিয়ে তাঁকে হুমকি দিয়েছে, যাতে মহারাজের থেকে দূরত্ব বজায় রাখি। অতিরিক্ত পুলিস সুপার (লালবাগ) রাসপ্রীত সিং জানিয়েছেন, মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণ সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
এদিকে ‘বন্ধু’ বিজেপি এই মারাত্মক অভিযোগের পরও কার্তিক মহারাজের পাশেই আছে। বহরমপুরে সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি মলয় মহাজন সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রাপ্ত কার্তিক মহারাজের নামে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা মিথ্যা। ১২ বছর আগের অভিযোগ আনা হয়েছে, যাতে স্মার্ট ফোনের তথ্য প্রমাণ দাখিল করা না যায়। কার্তিক মহারাজ ভারতবর্ষের এক পরিচিত মুখ। একজন সাধু ও সন্ন্যাসী হিন্দু সমাজের বৃহৎ অংশের প্রতিনিধি। তাঁকে আক্রমণ করার উদ্দেশ্য হল সমাজকে দূর্বল করা। বর্তমান সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে আগেও মহারাজের নামে নানা কুকথা বলেছেন। বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে চরিত্র হননের চেষ্টা চলছে। আসলে হিন্দুত্বের শক্তিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে। কোনও প্রমাণ ছাড়া যেভাবে অভিযোগ আনা হল, সেটার বিরুদ্ধে মানুষই প্রত্যাঘাত করবে। এই অভিযোগকারীর চরিত্র ও ব্যক্তিত্ব খতিয়ে দেখা দরকার।
নবগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক কানাই চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ধর্মের মুখোশ পরে যে অসামাজিক কাজকর্ম করছে, সেই খবর আমরা দীর্ঘদিন থেকেই জানি। তার প্রকৃত প্রমাণ আজ পাওয়া গেল এই মহিলার অভিযোগে মধ্য দিয়ে। তার এই বর্বরোচিত কাজের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে নিন্দা শুধু করছি না, এই অভিযোগে কঠোরতম শাস্তি চাইছি। শুধু এই মহিলা নয়, আরও অনেক ঘটনার সঙ্গে কার্তিক মহারাজ যুক্ত। সেগুলিরও তদন্ত চাই।