• কালীগঞ্জে তমন্না খুনে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত গাওয়াল-সহ দুই, চার দিনের মাথায় ধরল পুলিশ, বোমা ছুড়তে বলেছিলেন তিনিই?
    আনন্দবাজার | ২৮ জুন ২০২৫
  • কালীগঞ্জে ১০ বছরের নাবালিকা তমন্না খাতুনকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হল আরও দু’জনকে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন মূল অভিযুক্ত গাওয়াল শেখ এবং তাঁর পুত্র বিমল শেখ। মৃতার মা সাবিনা বিবির মুখে এই গাওয়ালের নাম শোনা গিয়েছিল। তিনি দাবি করেছিলেন, গাওয়ালই বোমা ছোড়ার নির্দেশ দেন। তিনিই ‘মূল মাথা’। শুক্রবার রাতে বর্ধমানের কাটোয়া থেকে এই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই নিয়ে কালীগঞ্জের ঘটনায় মোট গ্রেফতারির সংখ্যা দাঁড়াল ৯।

    গাওয়াল কালীগঞ্জে তৃণমূলের বুথ সভাপতির পদে আছেন। তমান্নার মৃত্যুর পর পরিবারের তরফে যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল, তাতে গাওয়াল এবং তাঁর পুত্র উভয়েরই নাম ছিল। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে বলেছেন, ‘‘গাওয়াল শেখ কালীগঞ্জ বোমাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আরও এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন ভাবে তল্লাশি অভিযান চলছে। শীঘ্রই সকল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।’’

    গত ১৯ জুন কালীগঞ্জে বিধানসভার উপনির্বাচন ছিল। সোমবার, ২৩ তারিখ ছিল ভোটগণনা। সে দিন ফল পুরোপুরি ঘোষিত হওয়ার আগেই কালীগঞ্জে শাসকদল তৃণমূলের জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। ফলে বিজয়মিছিল বার করা হয়। অভিযোগ, সেখান থেকে সিপিএম সমর্থকদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়েছিল। যে বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়েছে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তমন্নার। তার পরিবার সিপিএম সমর্থক হিসাবে পরিচিত। তমন্নার মা গাওয়ালকেই মূল অভিযুক্ত হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন। শনিবার গাওয়ালের গ্রেফতারির খবর শুনে তিনি বলেন, ‘‘গাওয়াল এখানকার মূল মাথা। ওর নির্দেশে বোমা হামলা হয়েছে। তবে ওর উপরেও মাথা আছে, পুলিশ সেটাও তদন্ত করে দেখুক। ওকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে পুলিশ সব জানতে পারবে।’’

    বুথ সভাপতির গ্রেফতারি প্রসঙ্গে তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের কোনও দল হয় না। কে কোন দলের সমর্থক, দেখার দরকার নেই। যে নারকীয় ঘটনা ঘটেছে, তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুক পুলিশ। দলীয় ভাবে আমরা সেই দাবি জানাচ্ছি।’’ তবে শাসকদলকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে বিজেপি। কৃষ্ণনগর নদিয়া উত্তরের বিজেপির সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, ‘‘বড় মাথাদের আড়াল করতে চুনোপুঁটিদের বলি দেওয়া হচ্ছে। যারা এত দিন ধরে গোটা এলাকাকে সন্ত্রস্ত করে রাখল, ভোটে যাদের তৃণমূল ব্যবহার করল, সেই মস্তানবাহিনীর শিকড় পর্যন্ত পৌঁছোনোর ক্ষমতা পুলিশের নেই। তবুও এই গ্রেফতারি মানুষকে কিছুটা ভয়মুক্ত করবে।’’

    এলাকার সিপিএম নেতা এসএম সাদি পুলিশকে একহাত নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ আগে থেকেই সব জানত। তারাই দুষ্কৃতীদের ‘সেফ প্যাসেজ’ দিয়ে রেখেছিল। শনিবার আমাদের প্রতিবাদ সভা আছে। ক্ষুব্ধ মানুষের জমায়েত আছে। পুলিশ ভয় পেয়ে কয়েক জনকে গ্রেফতার করছে। এসব নাটক চলবে না। এলাকার প্রত্যেক তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করতে হবে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)