• খরা কাটিয়ে বায়না বাড়ছে, খুশি যাত্রা দলের মালিকেরা
    আনন্দবাজার | ২৮ জুন ২০২৫
  • কোভিড-পর্ব থেকেই গোঘাটের কামারপুকুরের শতাব্দীপ্রাচীন যাত্রা শিল্প ঝিমিয়ে ছিল। তবে, যাত্রা দলের মালিকদের দাবি, শুক্রবার, রথের দিন যাত্রার জন্য বায়নার চেনা ভিড় ফিরেছে। মোট ১৮টি দল গড়ে ২০-২৫টি বায়না পাওয়া গিয়েছে। দলের মালিক ও কলাকুশলীদের কথায়, ‘‘ফের যাত্রার গরিমা ফিরছে।”

    যাত্রা দলগুলির অস্থায়ী অফিস কামারপুকুর চটিতে এ দিন হুগলি জেলা ছাড়াও সংলগ্ন বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও বর্ধমান জেলার যাত্রার আয়োজক ও নায়েকদের ভিড় ছিল। ‘গণেশ অপেরা’র মালিক ও নায়ক সব্যসাচী মৌলিক বলেন, “যাত্রায় ফের নব জোয়ার আসছে বলেই মনে হয়েছে। কোভিড-পর্বের পরে গত বছর পর্যন্ত এই দিনে ১২-১৩টির বেশি বায়না মিলছিল না। এ বার আমার দু’টি যাত্রাপালার মধ্যে ‘নটী বিনোদিনী’র জন্যই ২০টি বায়না পেয়েছি। আর সামাজিক পালা ‘সত্য মাস্টারের সংসার’ পেয়েছে পাঁচটি।”

    ‘মাতৃবন্দনা’ যাত্রা দলের মালিক জয়ন্ত পাইন, ‘রাজদীপ অপেরা’র মালিক কুমার রাজা, ‘মুক্ত মঞ্জরী’ অপেরার নির্মল মুখোপাধ্যায় জানান, বায়নায় ভাল সাড়া মিলেছে। এ দিনই প্রায় ১২০ রাতের বায়না মোটামুটি সব দলেরই নিশ্চিত হয়েছে।

    করোনা-পর্বে পালা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় অনেক যাত্রা শিল্পীকেই দিনমজুরি বা আনাজ বিক্রি করে সংসার চালাতে হয়েছে। গত কয়েক বছরও অনেকটা মন্দা গিয়েছে। এ বার বায়নার প্রথম দিনে আগ্রহ দেখে অপেরার মালিকদের বিশ্বাস, সারা বছরে অন্তত ২০০টি পর্যন্ত পালার বায়না মিলতে পারে।

    কামারপুকুরে অতীতে ৬০-৭০টি দল ছিল। এখন কমতে কমতে ১৮-য় ঠেকেছে। দল-পিছু রয়েছেন বিভিন্ন বয়সের ২০-২৫ জন কলাকুশলী। পালা-পিছু দর ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। দালালের মাধ্যমে বায়না হলে আরও দু’হাজার বেশি। অপেরা-পিছু যন্ত্রশিল্পী থেকে কলাকুশলীদের দৈনিক মজুরি ৪০০ থেকে দু’হাজার টাকা। তাঁদের মতে, গ্রামীণ এই যাত্রা শিল্পকে বাঁচাতে সরকারি স্তরে বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)