• ওঁদের লড়াই আরও কঠিন: আর জি করের নির্যাতিতার বাবা
    আনন্দবাজার | ২৮ জুন ২০২৫
  • দক্ষিণ কলকাতার নির্যাতিতা কলেজছাত্রীর পাশে থাকার বার্তা দিলেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নির্যাতিতা চিকিৎসক-পড়ুয়ার বাবা-মা। শুক্রবার তাঁরা এ-ও জানিয়েছেন, ওই ছাত্রীর মা-বাবাকে এ বার যে লড়াই লড়তে হবে, তাতেও পাশে থাকবেন তাঁরা। এ দিন নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘শোনার পর থেকেই ভীষণ কষ্টে আছি।ওই মেয়েটির মা-বাবার উপর দিয়ে যে কী ঝড় বয়ে যাচ্ছে, তা আমরা জানি। সামনে এখন খুব বড় লড়াই।’’ এক বছরও হয়নি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরেই ভয়াবহ নির্যাতনে মেয়েকে হারিয়েছেন তাঁরা। আর জি করের সেই ঘটনার পরে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বার বারপ্রশ্ন উঠেছে। এ দিন অবশ্য আর জি করের নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়েকোনও মন্তব্য করতে আর ইচ্ছে করে না।’’

    দক্ষিণ কলকাতার আইন কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষণের পরেই তিন অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে।যদিও তাতে স্বস্তির কারণ দেখছে না আর জি করের নির্যাতিতারপরিবার। তাঁর বাবা বলেন, ‘‘তিন জন গ্রেফতার হয়েছে বলে প্রথমে মনে হতে পারে যে, সব কিছুই খুব সহজে হয়ে গেল। কিন্তু মামলা যত এগোবে, তত দেখা যাবে,লড়াইটা কঠিন হচ্ছে। শুধু গ্রেফতার হলেই হবে না, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও প্রয়োজন। ওই তিন জন ছাড়া ঘটনায় আর কেউ যুক্ত কিনা, তা-ও খুঁজে দেখতে হবে।’’

    আর জি করের নির্যাতিতার মতো ভয়ঙ্করতম পরিণতি হয়নি দক্ষিণ কলকাতার কলেজছাত্রীর। কিন্তু আর জি করের পড়ুয়া-চিকিৎসকের পরিবার বলছে, ‘‘পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি কি ওই মেয়েটি এবংতাঁর মা-বাবাকে সহজে স্বস্তি দেবে? ওঁদের লড়াই আরও কঠিন।আইনি লড়াই থেকে শুরু করে যে কোনও দরকারে পাশে আছি। প্রয়োজনে ওঁদের বাড়িও যাব। ওঁদের জন্য রাস্তায় নেমে লড়তে হলে তা-ও করব।’’

    ন্যায়বিচার পেতে রাস্তায় নামার কথাও বলেছে আর জি করের নির্যাতিতার পরিবার। তাঁর বাবা বলেন, ‘‘আমার মেয়ে এখনও বিচার পায়নি। কিন্তু লড়াই থেকে তো সরে আসতে পারি না। আমাদের লড়াই এখনও চলছে। ওঁদেরও এখন লড়তে হবেএবং আদালতের উপরেই ভরসা করতে হবে। প্রশাসনের বা সরকারের উপরে ভরসা করে লাভ নেই।’’

    প্রসঙ্গত, আর জি করের ঘটনার পরে গোটা দেশ এই রাজ্যে এক অভূতপূর্ব প্রতিবাদ দেখেছিল। বহু মানুষ বিচারের দাবিতে পথেনেমেছিলেন। রাজপথে রাত জেগেছিলেন। কিন্তু সেই আন্দোলন ধীরে ধীরে থিতিয়ে গিয়েছেবলেই মনে করছেন অনেকে। এ দিন আর জি করের নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘এখন অনেকেই পাশে থাকবেন, পাশে থাকার আশ্বাস দেবেন। কিন্তু অনেকেইনিজের স্বার্থের জন্য পাশে থাকবেন। আমার মেয়ের জন্য লড়াই করতে গিয়ে দেখেছি, শিক্ষিতসমাজেরও একাংশ নিজেদের স্বার্থে আমাদের কাছে এসেছিলেন। তাঁদের অনেকেই এখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। নির্যাতিতা কলেজছাত্রীর পাশে কারা স্বার্থ নিয়ে আসছেন, তাঁদেরও চিনতে হবে ওই পরিবারকে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)