“সেতুর কাজ শেষ। তবু , কেন সবার জন্য সেতু খুলে দেওয়া হচ্ছে না?” — জয়দেবের কাছে অজয়ের উপরে অস্থায়ী রাস্তা ভাসতেই স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে প্রশ্নটা ভেসে উঠেছে।
এক দিকে বীরভূমের জয়দেব, কেঁদুলি ও অন্য দিকে, পশ্চিম বর্ধমানের শিবপুর। নদী পারা পার করতে হয় হিউম পাইপ, মোরাম বোল্ডার দিয়ে অস্থায়ী ভাবে তৈরি রাস্তা দিয়ে। বর্ষায় অজয় নদের জল বাড়লেই ভেসে যায় ওই অস্থায়ী পথ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেটাই ঘটেছে। দুর্ভোগ বেড়েছে নদের দু’দিকের মানুষের । তার পরেই প্রশ্নটা উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই দু্র্ভোগ কাটাতেই অজয়ের উপরে নতুন সেতু তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। সেই সেতুর কাজ শেষ হয়েছে বেশ কিছু দিন হল। সেতুর উপর ঝকঝকে রাস্তাও তৈরি। আলো বসে গিয়েছে। ভারবহন ক্ষমতাও পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেতুতে ওঠার দু’দিক ইটের স্তৃপ দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে। কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে সেতুর উপরে হাঁটাচলাও করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করাচ্ছেন, এই সমস্যা এড়াতেই ১৭ সালের ডিসেম্বরে কাঁকসার রঘুনাথপুরের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে অজয়ের উপরে নতুন সেতু তৈরি কথা ঘোষণা করেছিলেন। জমি জট-সহ নানা সমস্যা মিটিয়ে প্রায় সাড়ে সাত বছর পরে সেই সেতুর কাজই শেষ হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের।
শুক্রবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, অজয়ের উপরে সেতুরকাজ কার্যত শেষ হয়েছে। মসৃণ পিচের রাস্তাও তৈরি। দু’দিকে আলো লেগেছে। বীরভূমের দিক থেকে সেতুতে ওঠার সংযোগকারী রাস্তাও ঝকঝকে। বিরক্ত ভুক্তভোগীরা বলছেন সেতু হওয়ার পরে কেন কষ্ট পেতে হবে?
দু’টি মত উঠে আসছে। কেউ বলছেন, পশ্চিম বর্ধমানের দিকে সামান্য কাজ এখনও বাকি। বিপরীত মত হল, ওই সেতু উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। হয়তো তার জন্যই অপেক্ষা। বীরভূম জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘বীরভূম প্রশাসন সহায়তা করলেও সেতু তৈরি হচ্ছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে। যেটুকু জেনেছি, কাজ বাকি থাকার কথা নয়। যদিও কিছু কাজ থেকে থাকে সেটা মেটাতেও বেশি সময় লাগার কথা নয়।’’
পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্য জানান, সেতু সংযোগকারী রাস্তায় এখনও সামান্য কাজ বাকি। গার্ডওয়াল হয়নি। তিনি বলেনে, ‘‘এ দিকে মোট ২৬২ জন সেতুর জন্য জমি দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এক জন রেজিস্ট্রি করিয়ে দেননি। সে সমস্যা দু’-এক দিনে মিটবে। দুর্ভোগ হচ্ছে জানি। তাই জেলা প্রশাসনের নির্দেশে দ্রুত কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।’’