উপকূল রক্ষায় এবার আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিগত মূল্যায়ন ও পরামর্শে জোর দিচ্ছে রাজ্য। গঙ্গাসাগরের লাগাতার ভাঙন পরিস্থিতি পর্যালোচনায় মঙ্গলবার এলাকায় হাজির হলেন নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধিরা। সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে তাঁরা পরিদর্শন করেন বঙ্কিমনগর, সুমতিনগর, বোটখালি, কশতলা, মন্দিরতলা ও মহিষামারির মতো একাধিক উপকূলবর্তী এলাকা। খতিয়ে দেখা হয় কংক্রিট ও মাটির নদীবাঁধের অবস্থা।
গত এক দশকে ফণী, বুলবুল, আমপান, ইয়াস— একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে উপকূলের বাঁধ-ব্যবস্থা। বদলেছে নদীর গতিপথ, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি ও মৎস্যচাষ। প্রশাসন সূত্রে খবর, সুন্দরবনের ৫৪টি দ্বীপের মধ্যে অন্তত ৩৯টি এখন ‘সঙ্কটজনক’ স্তরে রয়েছে। ২০২০ সালেই আইইউসিএন (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনসারভেশন অফ নেচার) সুন্দরবনকে ‘বিপন্ন’ ইকোসিস্টেম হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সেই প্রেক্ষিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদলের গঙ্গাসাগর সফর।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, নেদারল্যান্ডসের পরামর্শে তৈরি হবে একটি পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যান। আপাতত গঙ্গাসাগর মেলা মাথায় রেখে কিছু স্বল্পমেয়াদি প্রকল্পের কাজ চললেও বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তায় সুন্দরবন এলাকা জুড়ে প্রায় ৪১০০ কোটি টাকার প্রকল্পে আগ্রহী রাজ্য। তবে কেন্দ্রীয় অনুমোদন মিললেই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব। সেই ক্ষেত্রে ৩০% ব্যয়ভার বহন করতে হবে রাজ্যকেই।
এলাকার বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, “কেন্দ্র কোনও সাহায্য করছে না। রাজ্য নিজের উদ্যোগে কাজ করছে। কপিলমুনি মন্দির চত্বরে বাঁধ তৈরির কাজ চলছে। নেদারল্যান্ডসের প্রযুক্তিগত পরামর্শ মেনে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, “ভাঙন তো বহুদিন ধরেই চলছে। এতদিন ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন?” রাজ্য-ডাচ যৌথ পরিকল্পনায় উপকূল রক্ষার কাজ কতটা এগোয়, এখন নজর সেদিকেই।