ওডিশার জলেশ্বরের এক সোনার দোকান থেকে প্রায় ১০০ গ্রাম সোনা চুরি করে পালানোর অভিযোগ উঠেছে মেদিনীপুর শহরের বিজেপি যুব মোর্চার এক নেতার বিরুদ্ধে। পুলিশ জানায়, সোনা চুরি করে পালানোর সময় ওই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়,ওই নেতার নাম সোমনাথ সাহু। তাঁর বাড়ি মেদিনীপুর শহরের হবিবপুর এলাকায়। ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। বিজেপি-কে তীব্র কটাক্ষ তৃণমূলের। অন্য দিকে, ওই নেতার সঙ্গে এখন আর দলের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দায় এড়িয়েছে বিজেপি।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার আনুমানিক দেড়টা নাগাদ জলেশ্বরের একটি সোনার দোকানে ক্রেতা সেজে ঢোকেন সোমনাথ। তিনি কালো রংয়ের স্করপিও গাড়িতে চেপে দোকানে গিয়েছিলেন। বিভিন্ন ধরনের অলঙ্কার দেখতে থাকেন তিনি। সে সময়েই দোকানের কর্মীদের অন্যমনস্কতার সুযোগ নিয়ে প্রায় ১০০ গ্রাম সোনার অলঙ্কার হাতিয়ে গাড়িতে উঠে চম্পট দেন ওই যুবক। দ্রুত অন্য গাড়িতে চেপে ওই যুবককে ধাওয়া করেন ওই দোকানের কর্মী এবং স্থানীয়রা।
জলেশ্বর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে লক্ষণনাথ রোড সংলগ্ন এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে সোমনাথের গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজনই গাড়ির ভেতরে থাকা সোমনাথকে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। বৃহস্পতিবার রাতেই ওই যুবককে গ্রেফতার করে জলেশ্বর থানার পুলিশ।
ধৃতকে প্রাথমিক জেরা করে জলেশ্বর থানার পুলিশ জেনেছে, একসময় মেদিনীপুর শহরের পাটনাবাজার এলাকায় সোনার কারিগর হিসেবে তিনি কাজ করতেন। তিনি বিজেপি যুব মোর্চার একজন সক্রিয় কর্মী। বিগত কয়েক বছর ধরে যুব মোর্চার জেলা কমিটির সম্পাদক পদে রয়েছেন। ফেসবুকে ধৃত যুবকের সঙ্গে বিজেপির উচ্চস্তরের নেতাদের ছবিও পাওয়া গেছে।
ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরই বিজেপি-কে তীব্র কটাক্ষ করেছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা। তিনি বলেন, ‘বিজেপি-র নেতা মানেই তো নারী পাচার, ড্রাগ পাচার, সোনা পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ। কোনও ভদ্রলোক বিজেপি করে না। আর এই জেলাতে এখন বিজেপির কোনও অস্তিত্বও নেই! যে ক'জন বিজেপির সঙ্গে যুক্ত, খতিয়ে দেখলে তাদের সকলেরই বিরুদ্ধেই কোনও না কোনও অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।’
পাল্টা বিজেপির জেলা মুখপাত্র অরূপ দাসের দাবি, ওই যুবক একসময় বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এটা ঠিক। কিন্তু, গত প্রায় দেড় বছর ধরে বিজেপির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নেই। নতুন জেলা কমিটি হয়নি বলেই ওঁর নামটা হয়তো থেকে গেছে।’ তিনি বলেন, 'খুনি-ধর্ষকদের দল তৃণমূলের মুখে কোনও কথা মানায় না! ওদের ছাত্র নেতা ওদের দলেরই ছাত্র নেত্রীকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ষণ করে। ওদের ছোড়া বোমাতে ১১ বছরের নাবালিকার মৃত্যু হয়।'
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই নিজের এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। পাশাপাশি অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের এক্স হ্যান্ডল থেকেও ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজসহ একটি পোস্ট করে ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।