কসবায় কলেজের মধ্যে ধর্ষণের ঘটনায় নড়েচড়ে বসল উচ্চশিক্ষা দফতর। কলেজের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করল বিকাশ ভবন। দ্রুত গভর্নিং বডির বৈঠক ডাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলেজকে। একই সঙ্গে কলেজের নিরাপত্তায় কেন গাফিলতি ছিল, তার জবাব তলব করেছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। কলেজের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষীর প্রয়োজন রয়েছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
শনিবা সকাল থেকেই গোটা কলেজ পুলিশের ঘেরাটোপে। ওই আইন কলেজের ইউনিয়ন রুম থেকে গার্ড রুম, সর্বত্র বসে রয়েছে পুলিশ। আশপাশের রাস্তাতেও যথেষ্ট পরিমাণে পুলিশ উপস্থিত রয়েছে। ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে ঘটনাস্থল। ওই আইন কলেজে এদিন সকালেই আসেন পুলিশের আধিকারিকরা। তাঁরা ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন।
২৫ জুন কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যেই এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। নির্যাতিতার অভিযোগ, কলেজের এক প্রাক্তনী ও দুই সিনিয়র ছাত্র তাঁকে ঘরে আটকে রেখে তাঁকে ধর্ষণ করে। ঘটনার পরদিনই মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র-সহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২৪ বছর বয়সি ওই ছাত্রীকে বৃহস্পতিবার পার্ক সার্কাসের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
চিকিৎসকদের বক্তব্য, পুলিশ যখন নির্যাতিতাকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে এসেছিল, তাঁর গলায় কামড়ের দাগ ছিল। শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট ছিল। যৌনাঙ্গেও আঘাতের চিহ্ন ছিল। বলপূর্বক ধর্ষণ করা হয়েছে ওই ছাত্রীকে। নির্যাতিতার বিবরণ গ্রহণের সময়ও চিকিৎসকদের কাছে যুবতী উল্লেখ করেছেন, তাঁকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছিল। একজন ধর্ষণ করে, বাকি দুইজন দাঁড়িয়ে ছিল।
পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘মেডিক্যাল পরীক্ষায় পাওয়া গিয়েছে জোর করে যৌনসম্পর্ক স্থাপনের প্রমাণ, কামড়ের দাগ এবং নখের আঁচড়। যা নির্যাতিতার অভিযোগের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।’
রাজ্যের প্রধান সরকারি কৌঁসুলি সৌরীন ঘোষাল বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ভিত্তিতে বলা যায়, কেউ ধর্ষণে সরাসরি অংশ না নিলেও যদি সহযোগিতা করে, তাহলেও সেটি গণধর্ষণ হিসেবে গণ্য হয়। এই মামলায় বাকি দুই অভিযুক্ত ঘরে ঢোকেনি ঠিকই, কিন্তু বাইরে পাহারা দিয়ে অপরাধে সহায়তা করেছে। ফলে তাঁরা একইভাবে দায়ী।’
রাজ্যের নারী ও শিশু উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তদন্ত জোরকদমে চলছে। অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই ঘটনায় দোষীদের কোনওভাবে ছাড়া হবে না। আইন অনুযায়ী কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে।’