দ্রুত গতিতে থাকা গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা স্কুটির, ছিটকে পড়ে মৃত্যু তিন আরোহীর
আনন্দবাজার | ২৮ জুন ২০২৫
কয়েক দিনের ব্যবধানে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে ফের দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। শুক্রবার ভোরে ঘোলা থানার অধীন খেপলির বিলের কাছে গাড়ির ধাক্কায় এক মহিলা-সহ তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম মফিজুল শেখ (২৩), সঞ্জীব দে (২৬) এবং খুশি মজুমদার। মফিজুলের বাড়ি রহড়া থানার অধীন পাতুলিয়ার শ্রীপল্লিতে, সঞ্জীবের বাড়ি বন্দিপুর ঠাকুর কলোনি এলাকায়। খুশি জগদ্দলের বাসিন্দা বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, তিন জনের কেউই হেলমেট পরে ছিলেন না।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে স্কুটিতে চেপে ওই তিন জন খড়দহের দিকে যাচ্ছিলেন। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে খেপলির বিল সংলগ্ন একটি গুদামের কাছে পিছন থেকে একটি গাড়ি ওইস্কুটির কাছাকাছি চলে আসে। সেটি সম্ভবত পণ্যবাহী গাড়িবলে স্থানীয়দের একাংশের অনুমান। গাড়ি ও স্কুটির মধ্যে কোনও ভাবে সংঘর্ষ ঘটে। দু’টি গাড়িরইগতিবেগ বেশি ছিল বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। তার জেরেই সংঘর্ষের পরে ছিটকে যায় স্কুটিটি। কয়েক মিটার দূরে গিয়ে ছিটকে পড়েন ওই তিন জন। পথ-বিভাজিকায় ধাক্কা খেয়ে মারাত্মক আহত হন তাঁরা। দ্রুত তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াহলে সবাইকেই মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। গাড়িটি শনাক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, খুশি একটি পানশালায় কর্মরত ছিলেন। তিনি তাঁর দুই পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে ভোরে বাড়ি ফিরছিলেন। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, গভীর রাত বা ভোরের দিকে পুলিশের নজরদারি কমে যায় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে। তখনই ঘটে নানা নিয়মভঙ্গের ঘটনা।
চলতি সপ্তাহেই সোমবার রাতে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে ঘোলা থানার অধীন মুড়াগাছার কাছে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় দুই কিশোরের। ওই ঘটনায় আরও এক কিশোরকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই তিন নাবালক ধাবায় চা খেয়ে মোটরবাইকে চেপে ফিরছিল। খড়দহ থেকে সোদপুরের দিকে যাওয়ার সময়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি চলন্ত ট্রেলারের পিছনে ধাক্কা মারে মোটরবাইকটি। ওই ঘটনাতেও কারও মাথায় হেলমেট ছিল না।
স্থানীয়দের একাংশের কথায়, বর্তমানে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির সংখ্যা এবং গতি বেড়েছে। যাত্রিবাহী বাস, পণ্যবাহী গাড়ি-সহ বহু যানবাহন ওই পথে যাতায়াত করে। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে এবং বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের সংযুক্তিকরণ ঘিরে ডাম্পার, ট্রেলারের যাতায়াতও রয়েছে। সেখানে ট্র্যাফিক আইন ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দেরই। সোদপুর রোড, সাজিরহাট রোড, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে হেলমেটবিহীন বাইক আরোহীদের প্রায়ই দেখা যায় বলেই স্থানীয় স্তরে অভিযোগ।
এক পুলিশকর্তা জানান, দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ করার পাশাপাশি সচেতনতার প্রচারেও জোর বেড়েছে। কিন্তু চালক কিংবা আরোহীদের একাংশের হুঁশ ফিরছে না। এ ক্ষেত্রেও চালক কিংবা আরোহীদের মাথায় হেলমেট ছিল না বলে জানা গিয়েছে। তবে দুর্ঘটনাগুলি খতিয়ে দেখে নজরদারি এবং প্রতিরোধের ব্যবস্থায় আরও জোর বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।