• পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সভাপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরেই দিল্লির অভিমুখে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু, জল্পনাও শুরু
    আনন্দবাজার | ২৮ জুন ২০২৫
  • পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে হবেন, তা ঠিক করতে শুক্রবার নির্দেশিকা জারি করেছেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। সেই আবহে জল্পনা উস্কে শনিবার সকালেই দিল্লি গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আগামী বছর মার্চ, এপ্রিল, মে মাস জুড়ে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন হওয়া কথা। সেই নির্বাচনে বিজেপিকে ‘নেতৃত্ব’ দেবেন কোন নেতা, তা এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়নি। বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ২০২৪ সালের নির্বাচনে বালুরঘাট লোকসভা থেকে পুনর্নির্বাচিত হয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। সেই থেকেই রাজ্য বিজেপির অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছিল, তাঁর দায়িত্ব লাঘব করতে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। কিন্তু এক বছর কেটে গেলেও ওই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করেননি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অবশেষে শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতার নাম ঘোষণা করেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ঠিক তার পরদিনই শুভেন্দু দিল্লিযাত্রা কৌতূহল এবং জল্পনা তৈরি করেছে রাজ্যের নেতাদের মনে।

    পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সভাপতি নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা পটনা সাহিবের বর্তমান সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদকে। শুক্রবার ওই ঘোষণার পরেই শনিবার সকালে দিল্লি গিয়েছেন শুভেন্দু। তবে ওই সফর সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেননি বিরোধী দলনেতা। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, নয়াদিল্লির এমসে চিকিৎসাধীন তমলুকের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখতে দিল্লি গিয়েছেন শুভেন্দু। মূলত তাঁর উদ্যোগেই অভিজিৎকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু শুভেন্দু সেই কারণ নিয়েও নিজ মুখে বলেননি। তাতেই জল্পনা ঘনীভূত হয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সভায় শুভেন্দুকে নিজের ‘পরম মিত্র’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। সেই সম্বোধনের প্রসঙ্গ টেনেই বিজেপির অন্দরে শুভেন্দুর দিল্লি যাওয়ার বিষয়টি দেখতে চাইছেন অনেকে। জল্পনা হল, তা হলে কি শুভেন্দুকে ‘মুখ’ হিসাবে তুলে ধরে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে যাবে বিজেপি? সেই জল্পনাকারীদের মধ্যে শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, এই মুহূর্তে নন্দীগ্রামের বিধায়কই পশ্চিমবঙ্গের বিজেপিতে সবচেয়ে ‘গ্রহণযোগ্য’ মুখ হিসেবে বিবেচিত। ফলে সুকান্তের ভার লাঘব করতে বিকল্প কাউকে ভাবা হলে শুভেন্দুই সবচেয়ে ‘যোগ্য’। যদিও এর পাল্টা যুক্তি হিসাবে বিজেপির অন্দরে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতির কথাও বলা হচ্ছে। এই অংশ শাহের উদাহরণ দিয়ে বলছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ায় শাহকে বিজেপি সভাপতির পদ ছাড়তে হয়েছিল। শুভেন্দুর রাজনৈতিক কাজকর্ম যে ভাবে এগোচ্ছে, তাতে ঘোষণা না হলেও তিনিই বিজেপির পরিষদীয় ‘মুখ’। রাজ্য বিজেপির একাংশের মতে, শুভেন্দু রাজ্য সভাপতি হোন বা না হোন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর ভূমিকা যে আরও গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে, তার ইঙ্গিত পেয়ে গিয়েছে রাজ্য বিজেপি। তাই তাঁর রাজধানী সফরে অন্দরে পদ্মশিবিরের অন্দরের রাজনৈতিক অঙ্ক আছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত রাজ্য বিজেপি নেতারা।

    যদিও এমন সমস্ত জল্পনা উড়িয়ে বিজেপি-তে শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ এক নেতা বলছেন, ‘‘প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এমস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে দেখতেই ঝটিকা সফরে দিল্লি গিয়েছেন শুভেন্দু’দা। আগের চেয়ে অভিজিৎবাবু ভাল আছেন। তবুও তাঁকে একবার দেখে আসতেই দিল্লি গিয়েছেন শুভেন্দু’দা।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)