ফের নবান্ন অভিযানের ডাক দিল শিক্ষক সমাজ! ‘যোগ্য’দের চাকরি, বকেয়া ডিএ-সহ উঠল পাঁচ দফা দাবি
আনন্দবাজার | ২৮ জুন ২০২৫
আগামী ২৮ জুলাই ফের নবান্ন অভিযানের ডাক দিল শিক্ষক সমাজ। শনিবার বিকেলে এই কর্মসূচির ঘোষণা করেছে পশ্চিমবঙ্গ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চ এবং সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালে প্যানেল থেকে ‘যোগ্য’দের চাকরিতে পুনর্বহাল এবং সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘভাতা-সহ বিভিন্ন দাবিতে পথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
এর আগে গত ২১ এপ্রিল নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল শিক্ষক সমাজের মিলিত সংগঠন। কিন্তু পুলিশ-প্রশাসনের তরফে আশ্বাস পেয়ে ওই সময় কর্মসূচি স্থগিত করে দেন আয়োজকেরা। ওই ঘটনার প্রায় তিন মাস পরে ফের নবান্ন অভিযানের ডাক দিলেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, মৌখিক আশ্বাসের পরেও বিশেষ কিছু সুরাহা হয়নি। সেই কারণেই আবার নবান্ন অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঐক্যমঞ্চ সূত্রে খবর, গত এপ্রিলে ভবানী ভবন, লালবাজার এবং হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে মঞ্চের নেতাদের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে পুলিশের শীর্ষকর্তারা মঞ্চের নেতাদের আশ্বাস দেন, তাঁদের দাবিদাওয়ার ব্যাপারে সরকারকে জানানো হবে। যত দ্রুত সম্ভব যাতে তাঁদের সমস্যার সমাধান হয়, তাঁরা সেই চেষ্টা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন পুলিশকর্তারা। এর পরেই নবান্ন অভিযান স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এ বার আন্দোলনকারীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কোনও মৌখিক নির্দেশ নয়, সমস্যার সমাধানের জন্য আলোচনায় বসার বিষয়ে নবান্ন থেকে যদি লিখিত নির্দেশ আসে, তবেই তাঁরা সেই আলোচনায় বসবেন।
শনিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে আন্দোলনকারীরা নিজেদের দাবিদাওয়া ফের তুলে ধরেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘দুর্নীতি’র কারণে যে চাকরিপ্রার্থীরা এখনও ‘বঞ্চিত’, তাঁদের অবিলম্বে স্বচ্ছ ভাবে স্থায়ী নিয়োগ করতে হবে। এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্যানেল থেকে ‘যোগ্য’দের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করতে হবে। রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী বকেয়া মহার্ঘভাতার ২৫ শতাংশ অবিলম্বে মিটিয়ে দিতে হবে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নারী নির্যাতনের অভিযোগেও সরব হয়েছেন তাঁরা। কলকাতার আইন কলেজে ধর্ষণকাণ্ডেও ন্যায়বিচারের দাবি তুলেছেন তাঁরা। এমন একগুচ্ছ দাবিতে আগামী ২৮ জুলাই নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে শিক্ষক সমাজ।
পশ্চিমবঙ্গ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চের আহ্বায়ক আশিস খামরই বলেন, “যত ক্ষণ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে বসে সমস্যার সমাধান করছেন, তত ক্ষণ পর্যন্ত এই লড়াই চলবে।” মঞ্চের অপর আহ্বায়ক দেবাশিষ বিশ্বাস বলেন, “বাংলার বেকার মেধাযুক্ত যুবক যুবতীদের ন্যায্য চাকরি যে টাকার জন্য বিক্রি হয়ে গিয়েছে, সেই চাকরি পেতে চাই। আইন ব্যবস্থা মাকড়সার জালের মতো বিছিয়ে গিয়েছে, যা গরিবদের ক্ষেত্রে যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠছে। সরকার কোনও রকম সমাধানের উদ্যোগ নেয় না। সরকার নিজেরাই দুর্নীতি করে নিজেরাই আইনের বেড়াজালে ফেলে বেকারদের রাস্তায় ফেলে রাখছে।”