• কলকাতায় আইনি ছাত্রীকে গণধর্ষণ, মদন-কল্যাণের বেফাঁস মন্তব্যে দায় নিল না দল, ড্যামেজ কন্ট্রোলে কড়া বার্তা
    ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস | ২৮ জুন ২০২৫
  • আরজি কর কান্ডে তিলোত্তমার ন্যায় বিচারের দাবিতে এখনও ফুঁসছে শহর। তার মাঝেই খাস কলকাতার কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। শনিবার কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে 'বিস্ফোরক' মন্তব্য করলেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তার জেরে হুস্থূল পড়ে গিয়েছে রাজ্য-রাজনীতিতে। এর আগে কসবার ঘটনা 'মেয়েদেরও উচিত কাদের সঙ্গে চলাফেরা করছেন সে বিষয়ে সচেতন হওয়া', এমনই মন্তব্য করে বিতর্ক বাড়িয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যান বন্দোপাধ্যায়। তার পর ফের আজ মদনের মন্তব্যে চূড়ান্ত অস্বস্তিতে শাসক শিবির। যদিও মদন মিত্রের মন্তব্যের পরই তড়িঘড়ি দলের তরফে এই ধরণের কোন রকম মন্তব্যের দায় ঝেড়ে ফেলা হয়েছে।

    তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে শনিবার সন্ধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে বলা হয়েছে, "সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজে ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনা প্রসঙ্গে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধায়ক মদন মিত্র যে মন্তব্য করেছেন, তা তাঁদের ব্যক্তিগত মতামত। দল তাঁদের বক্তব্যের সঙ্গে কোনোভাবেই একমত নয় এবং এই মন্তব্যগুলিকে কড়াভাবে নিন্দা করছে। এই ধরনের বক্তব্য কোনওভাবেই দলের অবস্থানকে প্রতিফলিত করে না"। পাশাপাশি কসবা কাণ্ডে ঘটনায় দলের অবস্থানকে আরও একবার সামনে এনে উল্লেখ করা হয়েছে, "আমাদের অবস্থান স্পষ্ট — মহিলাদের ওপর অপরাধের ক্ষেত্রে বরাবরই 'জিরো টলারেন্স' নীতি অনুসরণ করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও করা হবে। যারা এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়"।

    উল্লেখ্য, কসবা গণধর্ষণের ঘটনায় মদন মিত্রের বিতর্কিত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি। ফের তৃণমূলের বিরুদ্ধে নিগৃহীতাকে অপমানের অভিযোগে সরব হয় বিজেপি। কসবা কাণ্ডে এদিন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, “মেয়েটা যদি সেদিন না যেত, তাহলে এটা ঘটত না। কেউকে জানালে বা দু’জন বন্ধু সঙ্গে থাকলে হয়তো এই ঘটনা এড়ানো যেত।” মদনের এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে আসরে নামে বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযুক্তকে আড়াল ও নির্যাতিতাকে অপমানের অভিযোগে সরব হয় তারা।

    এই ঘটনায় মাত্র কয়েক ঘন্টা আগেই কসবা কাণ্ডে বেফাঁস মন্তব্য করেন বিশিষ্ট আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যান বন্দোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'মেয়েদেরও উচিত কাদের সঙ্গে চলাফেরা করছেন সে বিষয়ে সচেতন হওয়া'। বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা আরও বলেন,"কলেজে কলেজে পুলিশ বসানো যায় না, মহিলাদের রক্ষার দায়িত্ব সঙ্গে পুরুষ সহকর্মীদেরও। কিছু বিকৃত মানসিকতার লোক এই ধরনের জঘন্য অপরাধ করে, এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। মেয়েদের উচিত সাহস করে এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। তবে তাঁরা কাদের সঙ্গে চলাফেরা করছেন, সেটাও সচেতনভাবে দেখা উচিত।” পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, “সরকারি কলেজ হলেও যদি কর্তৃপক্ষের কোনও গাফিলতি থেকে থাকে, তাও খতিয়ে দেখা উচিত। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হওয়া জরুরি।”
  • Link to this news (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)