• কসবা কাণ্ডে পাঁচ সদস্যের সিট গঠন কলকাতা পুলিশের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৯ জুন ২০২৫
  • কসবার আইন কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করল কলকাতা পুলিশ। পাঁচ সদস্যের সিটের নেতৃত্বে রয়েছেন কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (দক্ষিণ শহরতলি) প্রদীপকুমার ঘোষাল। ইতিমধ্যেই ‘নির্যাতিতা’ এবং তাঁর বাবা-মায়ের গোপন জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আবেদন করেছে সিট। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত সহ চারজনকে।
    গণধর্ষণের ঘটনায় শনিবার আইন কলেজের নিরাপত্তা রক্ষীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের বয়স ৫৫ বছর। এর আগে বৃহস্পতিবার মনোজিৎ মিশ্র (৩১), জাইব আহমেদ (১৯) এবং প্রমিত মুখোপাধ্যায় (২০) নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র ওই কলেজের প্রাক্তনী এবং বর্তমানে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে সেখানে কাজ করছিলেন।

    থানায় দায়ের করা অভিযোগে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, কলেজের মূল ফটক আটকে দিয়ে তাঁকে সিকিউরিটি গার্ডের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাঁকে হকি স্টিক দিয়ে মারধর করা হয়। সেই সময় তাঁর মাথায় আঘাত লাগে। ধৃত পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঘটনাটি দেখা সত্ত্বেও নির্যাতিতাকে তিনি কোনও ভাবে বাঁচানোর চেষ্টা করেননি। এর পরেই তদন্তকারীদের স্ক্যানারে উঠে আসে ওই নিরাপত্তা রক্ষীর নাম। তদন্তে নেমে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

    পুলিশের বক্তব্য, ওই নিরাপত্তা রক্ষীর বক্তব্যে অসঙ্গতি রয়েছে। পুলিশের অনুমান, গার্ড সত্যি কথা বলছেন না। তিনি কোনও তথ্য লুকোনোর চেষ্টা করছেন। এদিকে নির্যাতিতা তাঁর অভিযোগে উল্লেখ করেছিলেন, ধর্ষণের ভিডিও রেকর্ড করা হয়েছিল। অভিযুক্তরা এই ভিডিও অন্য কাউকে পাঠিয়েছিলেন কি না, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেই মোবাইল থেকে অন্য কাউকে ভিডিও পাঠানো হয়েছিল কি না, তা দেখা হচ্ছে।

    কলেজের এক নম্বর গেটে যে সিসি ক্যামেরা রয়েছে, তাতে ইউনিয়ন রুম দেখা যায়। সূত্রের খবর, এই সিসিটিভি ফুটেজটি তদন্তকারীদের অন্যতম হাতিয়ার হতে চলেছে। ইউনিয়ন রুমে ঘটনার সময়ে, আগে বা পরে কারা ছিলেন, বাইরে কারা ছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রক্ষী সেই সময় কী করছিলেন, ঘটনায় তাঁর ভূমিকা কী, পুলিশ সে সবও দেখছে। সিসি ক্যামেরার দিকে নজর রয়েছে তদন্তকারীদের। পুলিশ সূত্রে খবর, কলেজ ক্যাম্পাসের মোট দু’টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এই ঘটনায় তদন্তের কাজে লাগতে পারে।

    পুলিশের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যে নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজের সঙ্গে তাঁর বয়ান মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে এই ঘটনায় নিজস্ব অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে বিজেপি। শীঘ্রই কমিটির সদস্যরা এই রাজ্যে আসবেন। এই কমিটি বাংলায় এসে কী করবে, তা নিয়ে শনিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন দলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘কসবাকাণ্ডে অভিযুক্তদের ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তদন্ত চলছে। তার মধ্যে বিজেপির এই ‘অনুসন্ধানের’ প্রয়োজনীয়তা কী?’
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)