নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: পরকীয়া রয়েছে সন্দেহে স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী রেলকর্মী! শনিবার সকালে জলপাইগুড়ি শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে দম্পতির জোড়া দেহ উদ্ধার ঘিরে এলাকায় আলোড়ন ছড়ায়। পুলিস জানিয়েছে, মৃতদের নাম সানি রাউত (৩৭) ও নন্দিতা রাউত (৩০)। প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের সন্দেহ, স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুনের পর গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন সানি।
তবে, ঘটনার আগে দু’জনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছে বলে মনে করছে পুলিস। কারণ, যে ঘর থেকে দম্পতির দেহ উদ্ধার হয়, সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল গৃহস্থালির জিনিসপত্র। পুলিসের দাবি, সানির কপালে ও নন্দিতার কাঁধে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, দম্পতির মধ্যে বনিবনা ছিল না। শুক্রবার রাতেও দু’জনের ঝগড়ার আওয়াজ পেয়েছেন তাঁরা। জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার (হেড কোয়ার্টার) শৌভনিক মুখোপাধ্যায় বলেন, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব হবে।
নন্দিতার বাবা সুনীল রাউতের অভিযোগ, মেয়েকে সন্দেহ করত জামাই। এনিয়ে ওদের মধ্যে মাঝেমধ্যে অশান্তিও হতো। প্রতিবাদ করলে মেয়েকে জামাই মারধর করত। আমাদের আশঙ্কা, মেয়েকে খুন করে জামাই আত্মঘাতী হয়েছে।
সানি ও নন্দিতার পরিবারের সবাই জলপাইগুড়ি শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে থাকেন। ওই দম্পতি সেখানেই ছিলেন। কিছুদিন আগে তাঁরা ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে পান্ডাপাড়া সাত নম্বর গলি এলাকায় আসেন। পরিবার সূত্রে খবর, পান্ডাপাড়ায় বাড়ি কিনতে মেয়ে-জামাইকে টাকা দেন রেলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সুনীল। জামাই সানিও রেলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ছিলেন। তাঁর দুই মেয়ে রয়েছে। তারা অবশ্য শুক্রবার রাতে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে এক আত্মীয়ের কাছে ছিল। এদিন সকালে নন্দিতার মা লক্ষ্মী রাউত পান্ডাপাড়ায় মেয়ে-জামাইয়ের খোঁজ নিতে যান। দেখেন, ঘরের সদর দরজা খোলা। ভিতরে ঢুকতেই আঁতকে ওঠেন লক্ষ্মী। বিছানায় মেয়ের দেহ পড়ে রয়েছে। পাশে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছেন জামাই। খবর পেয়ে পুলিস এসে ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয় কাউন্সিলার সন্দীপ ঘোষ বলেন, ওই দম্পতি কিছুদিন হল আমার ওয়ার্ডে এসেছিলেন। যতটুকু জানতে পেরেছি, প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতেন না তাঁরা। তাছাড়া দম্পতির মধ্যে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হতো। বাকিটা পুলিস তদন্ত করলেই জানা যাবে। নিজস্ব চিত্র।