• বাঁকুড়া থেকে মশাগ্রাম হয়ে জুড়ল হাওড়া, ভাবাদিঘির জট কাটিয়ে কবে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত ছুটবে রেল, উঠছে প্রশ্ন
    বর্তমান | ২৯ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: বাঁকুড়া থেকে মশাগ্রাম হয়ে জুড়ে গেল হাওড়া। শনিবার থেকে চালু হল ওই শাখায় ট্রেন। কিন্তু ভাবাদিঘির জট কাটিয়ে রেল প্রকল্প কবে চালু হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত ৪ জুন কলকাতায় পরিবহণ দপ্তরের সঙ্গে একটি বৈঠক হয় ভাবাদিঘির আন্দোলনকারীদের। তারপর আর কোনও বৈঠক আয়োজিত হয়নি। ফলে রেল প্রকল্পের কাজের গতি প্রকৃতি নিয়ে ধন্দে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া থেকে মশাগ্রাম পর্যন্ত মেমু ট্রেন চলাচল করছে দীর্ঘদিন। ওই শাখায় মশাগ্রামের সঙ্গে হাওড়াকে যুক্ত করার দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলনও করেছেন বাসিন্দারা। অবশেষে তা যুক্ত হয়েছে। এদিন পুরুলিয়া থেকে বাঁকুড়া, মশাগ্রাম হয়ে হাওড়া পর্যন্ত ট্রেন পরিষেবা চালুও হয়েছে। এদিন সাঁতরাগাছিতে রেল পরিষেবার উদ্বোধন করেছেন মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। ফলে ওই শাখার রেল যাত্রীদের অনেকটাই সুবিধা হল বলে দাবি। কিন্তু তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর প্রস্তাবিত রেল প্রকল্পের কাজ কবে শেষ হবে তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক ধরে এই শাখায় ভাবাদিঘি জটে আটকে রয়েছে রেল প্রকল্পের কাজ। তারফলে রেল পরিষেবা সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে। 

    যদিও ভাবাদিঘি বাঁচাও কমিটির সম্পাদক সুকুমার রায় বলেন, আমরাও চাই রেল লাইন হোক। কিন্তু শেষবারের মতো কলকাতায় একটি বৈঠক হয়েছে। তারপর ফের পরিবহণ দপ্তরের ২০ জুন বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বন্যা পরিস্থিতির কারণে তা পিছিয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত বৈঠক হওয়ার কোনও বার্তা আমাদের কাছে আসেনি।  তাঁর দাবি, বাঁকুড়া থেকে মশাগ্রাম হয়ে হাওড়া যুক্ত হয়েছে। কিন্তু আমাদের এখানে রেল ও প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে রয়েছে। ফলে সেখান থেকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হবে। 

    উল্লেখ্য, ভাবাদিঘি প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। আদালত তার পরিপ্রেক্ষিতে নির্দেশ দেয়। আদালতের সেই নির্দেশের পর হুগলি জেলা প্রশাসনের একাধিক তৎপরতা দেখা যায়। গোঘাট ১ ব্লক, আরামবাগ মহকুমা ও হুগলি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠক হয়েছে আন্দোলনকারীদের। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতো ভাবাদিঘিতে জমি জরিপের কাজও হয়েছে। এমনকী, কলকাতায় পরিবহণ দপ্তরের উচ্চ পদস্থ এক কর্তার অফিসে বৈঠক হয়। তারপর থেকে ভাবাদিঘি সম্পর্কে কোনও অগ্রগতির খবর পাওয়া যায়নি। এখন প্রশ্ন, জট কাটিয়ে কবে শুরু হতে পারে ভাবাদিঘি অংশে রেল সম্প্রসারণের কাজ। তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পের আওতায় আপাতত গোঘাট পর্যন্ত ট্রেন চলছে। কামারপুকুর থেকে বিষ্ণুপুরের দিকেও কাজ এগচ্ছে। পশ্চিম অমরপুরেও প্রকল্প নিয়ে জট রয়েছে। যদিও তা সমাধান হবে বলে আশা রেলের। কিন্তু গোঘাট ও কামারপুকুর স্টেশনের মাঝে ভাবাদিঘিতে থমকে রয়েছে রেলের কাজ। সেখানে দিঘির উপর দিয়ে রেল লাইন পাতার কাজ করতে আপত্তি জানিয়ে আন্দোলন করছেন বাসিন্দারা। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দ্রুত জট কাটিয়ে শুরু হোক রেলের কাজ। তাহলে বাঁকুড়ার সঙ্গে হাওড়ার যোগাযোগ আরও সহজ হবে। তারসঙ্গে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতিও ঘটবে।  গোঘাটের ভাবাদীঘি। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)