• বাংলাদেশি সন্দেহে ওড়িশায় আটক ভগবানপুরের ৪ ফেরিওয়ালা, উদ্বেগ
    বর্তমান | ২৯ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কাঁথি: বাংলাদেশি সন্দেহে ওড়িশার কটকে ফেরিওয়ালার কাজে যাওয়া পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের কোটবাড়ের চারজনকে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল। গত ২৪জুন রাত থেকে পাঁচদিন ধরে তাঁরা কটকের নিশ্চিন্তাকুইলি থানার পুলিসের হাতে আটক হয়ে রয়েছেন। তাঁদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় তাঁদের পরিবারের লোকজন অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তাঁরা প্রত্যেকে অবিলম্বে আটক চারজনের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। এব্যাপারে পুলিস-প্রশাসনের সর্বস্তরে আবেদনও জানানো হয়েছে। জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রার উদ্বোধনে এসে গত বৃহস্পতিবার দীঘায় সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, ওড়িশা সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে কাজ করতে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করা হচ্ছে। তাঁদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হচ্ছে। এর আগেও মুর্শিদাবাদের সাতজন পরিযায়ী শ্রমিককে আটক করা হয়। জেলা পুলিসের তৎপরতায় ওই শ্রমিকরা মুক্তি পেয়েছেন। তারপর ভগবানপুরের চারজনকে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠায় এনিয়ে প্রশাসনিক মহলে শোরগোল ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, ভগবানপুর থানার কোটবাড়ের বাসিন্দা শেখ সপু, তাঁর দুই ছেলে শেখ সাহেন, শেখ সাবুল ও প্রতিবেশী মতিবুল মহম্মদ স্টিলের বাসনপত্র ফেরি করেন। কটকের নিশ্চিন্তাকুইলির সুকরপাড়া এলাকায় ঘরভাড়া নিয়ে থাকতেন। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ফেরি করতেন। ২৪জুন রাত ১২টার সময় তাঁদের ভাড়াবাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায় নিশ্চিন্তাকুইলি থানার পুলিস। অভিযোগ, তাঁরা পুলিসকে আধার কার্ড সহ সমস্ত পরিচয়পত্র দেখালেও কোনও কথাই শুনতে চাওয়া হয়নি। এই ঘটনায় এখানকার পুলিস-প্রশাসনের কাছে আবেদন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন কোটবাড়ের বাসিন্দা কালু মহম্মদ। তিনিও সেখানে ফেরিওয়ালার কাজ করেন। কালু শেখ সপুর সঙ্গে ১৯৯৭সাল থেকে ওড়িশা এলাকায় ফেরিওয়ালার কাজ করছেন। কালু বলেন, যাঁদের আটক করা হয়েছে তাঁরা আমার আত্মীয়। শেখ সপু এবং মতিবুল আমার পিসির ছেলে। আমি কিছুদিন আগে বাড়ি চলে এসেছি। না হলে আমাকেও সেখানকার পুলিসের হাতে আটক হতে হতো। বর্তমানে চারজনকে কটকের আটঘর এলাকায় ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক করে রাখা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এখন আমরা কী করব বুঝতে পারছি না। এখানকার পুলিস-প্রশাসনই আমাদের ভরসা। ভগবানপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূল নেতা অরূপসুন্দর পণ্ডা বলেন, বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি আমাদের রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে রাখছে। তাঁদের কোনও নিরাপত্তা নেই। ওই পরিবারগুলির লোকজন সেখানে উকিল নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানকার জেলা পুলিস সুপার কোনও কথা বলতেই রাজি হচ্ছেন না। স্থানীয় থানার পুলিস আধিকারিকরা বলছেন, উপর মহলের অর্ডার রয়েছে। সেইমতো সব করা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি পুলিস-প্রশাসনের সর্বস্তরে জানিয়েছি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আবেদন জানানো হয়েছে। এগরার এসডিপিও দেবীদয়াল কুণ্ডু বলেন, এখনও পর্যন্ত এব্যাপারে কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)