• রাম রহিম ও আশারাম বাপুর সঙ্গে কার্তিক মহারাজের তুলনা তৃণমূলের
    বর্তমান | ২৯ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: আশারাম বাপু থেকে গুরমিত রাম রহিম সিং। একের পর এক ধর্মগুরুর নামে এর আগেও ধর্ষণের অভিযোগ এসেছে। তদন্তের পর অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার কারণে শ্রীঘরে ঠাঁই হয়েছে তাঁদের। এবার পদ্মশ্রী কার্তিক মহারাজকে সেই একই লাইনে বসিয়ে তীব্র আক্রমণ শানালেন তৃণমূল নেতারা। এক মহিলাকে চাকরি দেওয়ার নাম করে ধর্ষণ এবং জোর করে গর্ভপাত করার মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত এই মহারাজের বিরুদ্ধে। নির্যাতিতার অভিযোগের  ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে নবগ্রাম থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর তুমুল শোরগোল শুরু হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে তাঁর পদ্মশ্রী সম্মান ফিরিয়ে নেওয়া হোক বলে দাবি তুলেছেন তৃণমূল নেতারা। 

    বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা বিধায়ক অপূর্ব সরকার বলেন, এর আগেও দেখেছি রাম রহিম থেকে আশারাম বাপুকে। এঁরা বিজেপির ছত্রচ্ছায়ায় থেকেও জেল খাটছেন। তাই আমাদের দেশে কোনও ব্যক্তিই সন্দেহের ঊর্ধ্বে নন। এমন মারাত্মক অভিযোগ যখন সামনে এসেছে, তার উপযুক্ত তদন্ত করা হোক। আমরা জানি, বাঙালি মহিলারা লাঞ্ছিত অপমানিত হয়েও মুখ বুঝে সংসার করেন। তাঁরা কোথাও অভিযোগ করতে যান না। একজন ঘরের মহিলা যখন এই ধরনের অভিযোগ আনছেন, গুরুত্ব সহকারে তার তদন্ত করা উচিত। তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর এদিন বলেন, ভারত সরকারের উচিত কার্তিক মহারাজের পদ্মশ্রী অবিলম্বে কেড়ে নেওয়া। 

    যদিও বিজেপি কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে। এই প্রেক্ষিতে হুমায়ুন বলেন, এখানে শাসক দলের কোনও ভূমিকা নেই। যে মহিলা এই ধরনের অভিযোগ করেছেন, সেটা যদি মিথ্যা হতো তাহলে তো ওই মহিলার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা যেত। সেই সৎসাহস ওঁর নেই। বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক লাল্টু দাস বলেন, অভিযোগ অবশ্যই মারাত্মক। তবে, ১৩ বছর আগের এই ধরনের অভিযোগের ভিত্তি কতটা থাকে, তা নিয়ে তো প্রশ্ন উঠবেই। তৃণমূল নেতারা যে আশারাম বাপু এবং রাম রহিমের কথা বলছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলেই তাঁরা সাজা পাচ্ছেন। এখন কার্তিক মহারাজকে তাদের সঙ্গে গুলিয়ে দিলে হবে না। পুলিস যথোপযুক্ত তদন্ত করুক। আমাদের একটাই দাবি থাকবে, শাসকদলের অঙ্গুলি হেলনে যেন এই তদন্ত না করা হয়। সেক্ষেত্রে তদন্তে যেটা সামনে আসবে, সেটাই সত্য বলে মানা হবে। উল্লেখ্য, এদিনই কার্তিক মহারাজকে সম্মাননা প্রদান করা হয় বহরমপুরের রবীন্দ্র সদনে। অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান হলেও সেখানে হাজির ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি মলয় মহাজন ছাড়া অন্যান্য নেতারা। মলয়বাবু বলেন, কার্তিক মহারাজ পদ্মশ্রী পেয়েছেন। তাই জেলাবাসী হিসেবে আমরা তাঁকে সম্মান জানিয়েছি। একটি অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান এটি। আমাকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল বলে আমি হাজির হলাম। 
  • Link to this news (বর্তমান)