গণধর্ষণের পর দেড় মিনিট ধরে তরুণীর নগ্ন ভিডিও মোবাইল বন্দি করে মনোজিৎ
বর্তমান | ২৯ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাত ৯টা থেকে রাত ১০টা ৫০। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে কলেজের গার্ড রুমে আইনের ছাত্রীর উপর নারকীয় অত্যাচার চালায় তিন অভিযুক্ত। ধর্ষণের পর নগ্ন অবস্থায় ফের উত্যক্ত করা হয় নির্যাতিতাকে। তাঁর জামাকাপড় পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হয়। দেড় মিনিট ধরে নিজের মোবাইল ফোনে তরুণীর বিধ্বস্ত ও নগ্ন অবস্থার ভিডিও তোলে মনোজিৎ মিশ্র। নির্যাতিতা পুলিসকে জানিয়েছেন, ধর্ষণের কথা পরিবারের সদস্য বা পুলিসকে জানালে সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেয় মনোজিৎ অ্যান্ড কোং। পুলিস সূত্রে খবর, মূল অভিযুক্তের মোবাইল ফোনের সেই দেড় মিনিটের ভিডিও তাদের হাতে এসেছে। আদালতের অনুমতিক্রমে সেই ভিডিও ধৃতের বাজেয়াপ্ত হওয়া মোবাইল থেকে উদ্ধার করা হবে। ঘটনার প্রমাণ হিসেবে ওই ভিডিওই কার্যত ‘তুরুপের তাস’ হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। পুলিসের অনুমান, পরিকল্পনামাফিক ধর্ষণ করা হয়েছে ওই কলেজছাত্রীকে। যৌন নিগ্রহ ও ধর্ষণের জন্য দু’টি জায়গা বাছাই করা হয়। প্রথমে কলেজের শৌচালয়ের সামনে ছাত্রীর উপর চড়াও হয় মনোজিৎ ও তার দলবল। সেখানে কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। এরপরেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় গার্ড রুমে। সেই চত্বরও সিসি ক্যামেরার নজরদারির আওতায় পড়ে না। তদন্তকারীদের দাবি, অপকর্মের কোনও প্রমাণ যাতে না থাকে, তা নিশ্চিত করতেই এমন দু’টি জায়গা বেছে নিয়েছিল অভিযুক্তরা। এদিকে, কসবার ল কলেজের ঘটনা নিয়ে এদিন শহর ও শহরতলির বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় বিক্ষোভে দেখায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে গড়িয়াহাটে প্রতিবাদ মিছিল করে গেরুয়া শিবির। গড়িয়াহাট মোড় অবরুদ্ধ করে দেন তাঁরা। ঘটনাস্থল থেকে সুকান্তবাবু সহ নেতাকর্মীদের আটক করে পুলিস। হাওড়াতেও ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায় বাম ছাত্র-যুব সংগঠন। কসবা এলাকাও বিক্ষোভে সরগরম ছিল দিনভর।
শুক্রবারই কসবা থানা অভিযানে গিয়ে পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন বাম নেতারা। সেই মিছিল থেকে সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্য সুদীপ সেনগুপ্ত, ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক ধ্রুবজ্যোতি সাহা সহ মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিস। শনিবার তাঁদের আলিপুর পুলিস আদালতে পেশ করা হলে বিচারক সবারই জামিন মঞ্জুর করেন। সূত্রের খবর, তাঁদের ১১ নভেম্বর ফের আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিন আলিপুরেও জমায়েত করেছিল বাম কর্মী-সমর্থকরা।