অসমাপ্ত রেল প্রকল্প নিয়ে রাজ্যকে খোঁচা রেলমন্ত্রীর, পাল্টা তোপ তৃণমূল সাংসদের
বর্তমান | ২৯ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার সঙ্গে মশাগ্রাম হয়ে রেলপথে এবার সরাসরি হাওড়ার সঙ্গে যোগাযোগ। শনিবার নতুন এই রেলপথে মেমু ট্রেনের সূচনা করলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। দুপুর দেড়টা নাগাদ সাঁতরাগাছি রেল স্টেশনে রেলমন্ত্রী সবুজ পতাকা নাড়তেই পুরুলিয়া-বাঁকুড়া থেকে হাওড়াগামী মেমু ট্রেন প্রথম যাত্রা শুরু করে। রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার ও সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। রেল ও কলকাতা মেট্রোর থমকে থাকা বিভিন্ন কাজ নিয়ে মঞ্চে রাজ্যের অসহযোগিতার কথা তুলে ধরেন রেলমন্ত্রী। পাল্টা হাওড়ার বাকসাড়া রেল ক্রসিংয়ে নিত্যদিন লক্ষাধিক সাধারণ মানুষের ভোগান্তি নিয়েও রেলকে একহাত নিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ।
পুরুলিয়া-বাঁকুড়া থেকে মশাগ্রাম হয়ে হাওড়া সরাসরি রেল যোগাযোগের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই জানিয়ে আসছিলেন দুই জেলার লক্ষ লক্ষ বাসিন্দা। অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময়েই এই দাবি মেটাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০০ সাল থেকে পূর্ব রেলের এই রেলপথকে ব্রডগেজে রূপান্তরের কাজ শুরু হয়। ২০২১ সালে বৈদ্যুতিকরণ সহ সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়। অবশেষে এই রেলপথে চালু হল ট্রেন। এদিন ট্রেনের উদ্বোধন প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যকে নিশানা করে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলায় রেলের নানা প্রকল্পের জন্য প্রায় চার হাজার হেক্টর জমির প্রয়োজন। কিন্তু রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার জন্য রেল সেই জমি পাচ্ছে না। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে রাজ্য সরকার যেন সহযোগিতা করে।’ রেলমন্ত্রীর দাবি, খিদিরপুরে মেট্রো রেলের একটি ছোট প্রকল্পের কাজের জন্য ৮০০ স্কোয়ার মিটার জায়গা প্রয়োজন। কিন্তু ২০২০ সাল থেকে রাজ্য সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় তা পড়ে রয়েছে। একইভাবে আটকে রয়েছে চিংড়িহাটা, বেলেঘাটায় মেট্রোর প্রকল্পের কাজ। পাশাপাশি বিষ্ণুপুর-তারকেশ্বর লাইন, বেলুড়-দিল্লি কিংবা নন্দীগ্রামে রেল প্রকল্পের অগ্রগতির ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার প্রসঙ্গ টেনে আনেন রেলমন্ত্রী।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রেলের বিরুদ্ধে কার্যত ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘রেলকে কীভাবে রাজ্য সরকার সাহায্য করবে, তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শেখাতে হবে না। উনি নিজে দু’বার রেলমন্ত্রী ছিলেন। রেলের উন্নতির ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোন আপস করেন না। রেলমন্ত্রীর অভিযোগ ভিত্তিহীন।’ প্রসূনবাবুর দাবি, বাকসাড়া রেল ক্রসিংয়ে দিনভর অ্যাম্বুলেন্স, ছোট গাড়ি সহ প্রচুর সাধারণ মানুষ আটকে থাকেন। ওই এলাকায় প্রায় তিন লক্ষ মানুষের বসবাস। বছরের পর বছর ধরে একটি আন্ডারপাসের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। সেই দাবিকে তিনি বহুবার পূর্বতন ও বর্তমান দুই রেলমন্ত্রীর কাছেই তুলে ধরেছেন। কিন্তু রেল কর্ণপাত করছে না। প্রসুনবাবু আরও বলেন, ‘এদিন রেলমন্ত্রীকে ফের আন্ডারপাসের কথা জানালাম। কিন্তু স্রেফ দেখছি বলেই বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন।’