• পুরীর রথযাত্রায় বিশৃঙ্খলা! পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু অন্তত তিন জনের, আহত আরও অনেকে
    আনন্দবাজার | ২৯ জুন ২০২৫
  • পুরীর রথযযাত্রায় বিশৃঙ্খলা। ঘটে গেল পদপিষ্টের ঘটনা। রবিবার ভোরে পুরীর গুণ্ডিচা মন্দিরের কাছে পদপিষ্টের ঘটনায় অন্তত তিন জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহত আরও অনেকে।

    পুরীর মূল মন্দির থেকে গুণ্ডিচা মন্দিরের দূরত্ব মেরেকেটে তিন কিলোমিটার। কিন্তু এই তিন কিলোমিটার পথ পেরোতে গিয়ে বার বার আটকে যায় নন্দীঘোষ, তালধ্বজ, দর্পদলন— তিনটি রথ। এই তিন রথে ছিল জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার বিগ্রহ। শুক্রবার মূল মন্দির থেকে গুণ্ডিচা মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দিলেও, তা গন্তব্যে পৌঁছোতে পারেনি। শনিবার তিনটি রথ পৌঁছোয় গুণ্ডিচা মন্দিরে। কিন্তু শনিবার রথ থেকে জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রাকে নামানো যায়নি। রাতভর তিনটি রথ ঘিরে বহু ভক্ত ভিড় করেছিলেন। পুলিশ-প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করেই রথের কাছে পৌঁছোনোর চেষ্টা করেন ভক্তেরা। আর তাতেই ঘটে যায় বিপত্তি।

    রবিবার মাঝরাত থেকে গুণ্ডিচা মন্দিরের কাছে জগন্নাথদেবদের রথ ঘিরে ভির ক্রমশ বাড়তে থাকে। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ রথগুলি মন্দিরে দিকে এগোতে শুরু করতেই ভিড়ের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ভিড়ের মধ্যে পড়ে যান কিছু লোক। ভিড়ে পদদলিত হয়ে ঘটনাস্থলেই তিন জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে দু’জন মহিলা— প্রভাতী দাস এবং বাসন্তী সাহু। অন্য জন সত্তোরোর্ধ্ব বৃদ্ধ প্রেমাকান্ত মোহান্তি। জানা গিয়েছে, তিন জনই ওড়িশার খুরদা জেলার বাসিন্দা। রথযাত্রা উপলক্ষে এসেছিলেন পুরীতে। এই ঘটনায় বেশ কয়েক জন আহতও হন। তাঁদের উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিন জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন। তিনি জানান, ঘটনার উপর নজর রাখা হচ্ছে। গাফিলতির অভিযোগ মিললে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

    শুক্রবার সকাল থেকেই রথ উপলক্ষে ভিড় উপচে পড়েছিল দিঘায়। খাতায়-কলমে পুরীতে শুক্রবার লোক হয়েছে প্রায় ১৩ লক্ষ। কিন্তু শুক্রবার যাত্রা শুরু হলেও সেখানে পৌঁছোতে পারেনি তিনটি রথ। তার আগেই ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েন ৬০০ জন। হাসপাতালে এখনও ভর্তি অন্তত ৭০ জন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে থেমে গিয়েছিল যাত্রা। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ আবার শুরু হয় যাত্রা। দুপুর ১১টা ২০ মিনিটে গুণ্ডিচা মন্দিরে পৌঁছোয় বলভদ্রের তালধ্বজ। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে পৌঁছোয় সুভদ্রার দর্পদলন। দুপুর ১টা ১১ মিনিটে পৌঁছোয় জগন্নাথের নন্দীঘোষ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবারও রথযাত্রায় শামিল হয়েছিলেন প্রায় আট লক্ষ মানুষ। রাতের দিকে ভিড় আরও বাড়তে থাকে বলেই পুলিশ-প্রশাসন সূত্রে খবর।

    পদপিষ্ট হওয়ার কারণ হিসেবে অপ্রত‍্যাশিত ভিড়ের কথাই বলেছে ওড়িশা সরকার। তবু স্থানীয় প্রশাসন ও শ্রীমন্দিরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে দাবি, রথ সংলগ্ন ঘেরাটোপে বাড়তি লোকজনকে ঢোকার ছাড়পত্র দেওয়ার জন্যই ভুগতে হয়েছে এত মানুষকে। প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের হঠকারিতার ফলেই এত জনের জীবন নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)