• বন্ধ চায়ের দোকান, বহুরূপী সেজে মাইলের পর মাইল হেঁটে উপার্জন, প্রৌঢ়ের সংগ্রাম চোখে জল আনবে...
    আজকাল | ২৯ জুন ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: একটা সময় চায়ের দোকান চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের দেখভাল করতেন হালিশহরের বাসিন্দা অশোক মজুমদার। তাঁর চায়ের দোকান ছিল হালিশহর শহরের রাস্তার উপরে একটি ছোট্ট গুমটি। তবে গতবছর বেআইনি জবরদখল উচ্ছেদের কাজে নামে প্রশাসন। তাতেই দোকান হারিয়েছেন বছর ৫৬ অশোক মজুমদার। তাই পেট চালাতে বেছে নিয়েছেন নতুন পেশা। এখন তিনি বহুরূপী সেজে, মানুষের কপালে টিপ পরিয়ে উপার্জন করেন। জীবন সংগ্রামের লড়াই যে ঠিক কতটা কঠিন তা হয়তো কিছুটা বোঝা যায় বছর ৫৬ এই প্রৌঢ়কে দেখলে।

    রোজগারের তাগিদেই তিনি মুখে রং মেখে মাথায় পরচুলা লাগিয়ে, কখনও হন কালি, কখনও বা মহাদেব। এই যেমন মাহেশের রথযাত্রার দিনে তিনি মাহেশে উপস্থিত হয়েছিলেন মহাদেব সেজে। এখানে এসে বিভিন্ন ভক্তদের কপালে টিপ পোড়ানোর কাজ করছিলেন। তাতে খুশি হয়ে ভক্তরা যা দেন, তাই দিয়েই চলে তাঁর সংসার। 

    সংসারে বউ, ছেলে-মেয়ে সকলেই রয়েছেন। যদিও ছেলেরা বড় হয়ে আলাদা হয়ে গেছেন। তাঁদের সংসার আলাদা। আর এখন তিনি তাঁর স্ত্রী ও তার দুই পোষ্যকে নিয়ে চলে সংসার। সংসার চালানোর জন্য তিনি বিভিন্ন মেলা, অনুষ্ঠান বাড়ির এই সমস্ত জায়গায় হাতে, মুখে রং লাগিয়ে সং সেজেই উপার্জন করেন। 

    আগে যখন চায়ের দোকান ছিল, তাঁর সেই চায়ের দোকান থেকেই উপার্জন চলতো। এখন উপার্জন করতে গেলে হাঁটতে হয় তাঁকে মাইলের পর মাইল। শুক্রবার রথযাত্রায় মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরে মহাদেব সেজে তিনি যখন উপস্থিত হন, তাঁকে দেখে বেশ কিছু উৎসুক মানুষ এগিয়ে আসেন তাঁর কাছে টিপ পড়তে। দশ টাকা, পাঁচ টাকা যে যেমন দেন, তাই দিয়েই হয় তাঁর উপার্জন। 

    যদি কোনদিন কপাল ভাল থাকে, ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত তিনি উপার্জন করে নেন। আর কোনও কোনও দিন আবার তেমন কিছুই হয় না। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে তিনি। পেট চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় তাঁকে। তবুও সদা হাসিমুখে মানুষের ভিড়ের মধ্যে মিশে মানুষকে আনন্দ দিয়ে নিজের দুঃখ ঢাকেন হালিশহরের অশোক মজুমদার। 
  • Link to this news (আজকাল)