জেতা আসনেও ২ নাম, প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া তৃণমূলের
আনন্দবাজার | ২৯ জুন ২০২৫
এ বার বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের জেতা আসনেও প্রার্থীদের জয়ের সম্ভাবনা যাচাই করে দেখছে তৃণমূল কংগ্রেস। সব কেন্দ্রের জন্যই বিকল্প নামও ভেবে রাখা হচ্ছে।তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদলের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে দলের পরামর্শদাতা সংস্থা।
প্রায় সব জেলায় একেবারে ব্লক স্তর পর্যন্ত সাংগঠনিক পদাধিকারী বেছে নেওয়ার পাশাপাশি জেতা ও হারা আসনে এই সমীক্ষা চলছে দু’ভাগে। তার একটি রিপোর্ট যাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে, অন্যটি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।
২০২১ সালে ২১৫ আসনে জিতে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। তারপর ভাঙাগড়া চলেছে। জেতা আসন মোটামুটি দখলে থাকলেও হেরে যাওয়া বেশ কয়েকটি আসনের উপনির্বাচনে জিতে এখন তাদের দখলে ২২০ আসন। সংখ্যার বিচারে সন্তোষজনক অবস্থা হলেও এ বারেও প্রার্থী বাছাইয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছেন দলীয় নেতৃত্ব। কেন্দ্র পিছু অন্তত দু’টি নাম সামনে রেখে পরামর্শদাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা একেবারে নীচের তলার মতামত নিচ্ছেন। একাধিক জেলায় সংস্থার কর্মীরাও নানা প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে বিভিন্ন সময়ে এই রকম সমীক্ষার পরেও দলের সিদ্ধান্তে প্রকৃত অবস্থার প্রতিফলন না হওয়ায় ক্ষোভও জানিয়েছেন কেউ কেউ।
উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ— রাজ্যের বেশির ভাগ জেলায় দলের নির্বাচনী প্রস্তুতিতে গতি বাড়িয়েছে তৃণমূল। ২১ জুলাইয়ের দলের ‘শহিদ স্মরণ’ কর্মসূচি নিয়ে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে দিন কয়েক আগে। নীচের তলার সংগঠন এবং প্রার্থী বাছাই নিয়ে বৈঠকও শুরু হয়েছে পঞ্চায়েত এবং পুরসভা স্তরে। এই প্রার্থী বাছাইয়ে সমান্তরাল কাজ করছে পরামর্শদাতা সংস্থার দু’টি দল। দলীয় সূত্রে খবর, শহরাঞ্চলে ব্লক স্তরের পদাধিকারী ও পুরপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে কে ভাল প্রার্থী হতে পারেন, সেই সম্পর্কে মত নেওয়া হচ্ছে। দলীয় বিধায়ক সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে খবর, গত লোকসভা ভোটে এগিয়ে থাকা আসনের মধ্যেও দলের ‘ভাল’, ‘তুলনামূলক ভাল’ ও ‘খারাপ’ আসন চিহ্নিত করেছে তৃণমূল। মূলত সেই অঙ্কের ভিত্তিতে গত এক বছরে বিধায়কের কাজ এবং জনসংযোগ সম্পর্কে খোঁজখবর চলছে। প্রতিটি কেন্দ্রের জনবিন্যাসের কথা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, সব আসনের জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় পছন্দের নাম বাছাই করে মমতা ও অভিষেকের অফিসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। দলের এক নেতা বলেন, “বিকল্প নাম বেছে রাখার বিষয়টি নতুন কিছু নয়। এটা সামগ্রিক নির্বাচনী প্রস্তুতিরই অঙ্গ। কোথাও প্রার্থী বদল হবে কি না, তা অবশ্য এই পর্বে স্থির হওয়ার নয়।” প্রয়োজন মতো ব্লক স্তরে সাংগঠনিক পদাধিকারী বদলের প্রক্রিয়াও চলছে। চলতি মাসে তা মেটাতে চায় তৃণমূল।