• বাংলায় আসন কমে অর্ধেক? শঙ্কিত বিজেপির অস্ত্র ভোটার লিস্টে কারচুপি!
    বর্তমান | ২৯ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: আগামী বিধানসভা ভোটে বাংলায় ৪৬ থেকে ৪৯টির বেশি আসন জুটবে না বিজেপির ভাগ্যে। খোদ গেরুয়া শিবিরের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষাতে উঠে এসেছে এই তথ্য। সেই কারণেই বিহারকে স্রেফ ‘দাবার বোড়ে’ বানানো হয়েছে। আসলে শুদ্ধিকরণের নামে ভোটার তালিকায় কারচুপির ষড়যন্ত্রের প্রধান টার্গেট পশ্চিমবঙ্গ। শনিবার রাজধানীতে সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনই দাবি করল তৃণমূল কংগ্রেস। নয়াদিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি বলেন, ‘মোদি সরকার ২০২১ সালে ভোটের আগে সিএএ এনেছিল। আর এখন ঘুরপথে এনআরসির ধাঁচেই ভোটার তালিকা শুদ্ধিকরণ করতে চাইছে। বিজেপি সমীক্ষা করে দেখেছে, বাংলায় ওরা ৪৬-৪৯ টার বেশি আসন পাবে না। গত এক বছরে ১১টা উপ নির্বাচনে একটাতেও জিততে পারেনি বিজেপি। তাই এখন ভোটারদের নাম বাদ দিতে চাইছে। তবে আমরা তা হতে দেব না। বিহারের যে স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা বন্ধ করতে হবে।’ তাঁর সাফ কথা, এটা শুদ্ধিকরণ নয়, ষড়যন্ত্র!

    নির্বাচন কমিশনের এই ‘ফরমান’ নিয়ে বিরোধীদের মধ্যে সর্বপ্রথম গর্জে উঠেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে সরব হয় কংগ্রেস, আরজেডি, সমাজবাদী পার্টিও। মমতার নির্দেশেই দলের সাংসদদের এদিনের সাংবাদিক সম্মেলন। কমিশনের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছেন ডেরেক। বলেছেন, ‘এ তো হিটলারের নাৎসি জমানার মতো অবস্থা! জার্মানিতে তখন অ্যানসেস্টর পাস দেখাতে হতো। ঠিক যেভাবে বিহারে ভোটারদের বলা হচ্ছে বাবা মায়ের জন্ম তারিখে প্রমাণপত্র দেখাও। এভাবে চলতে পারে না।’

    আগামী ২১ জুলাই থেকে সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে। তার আগে এই ইস্যুতে মোদি বিরোধী মহাজোট ‘ইন্ডিয়া’কে এককাট্টা হয়ে প্রতিবাদে নামার আহ্বান জানিয়েছে তৃণমূল। বাদল অধিবেশনের আগেই এই ইস্যুতে তারা নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হবে। বাদল অধিবেশনেও বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা সোচ্চার হবে বলে দাবি তৃণমূলের রাজ্যসভার উপ দলনেতা সাগরিকা ঘোষের। তিনি বলেন, ‘আসলে বিজেপি মানুষের ভোটাধিকারই কেড়ে নিতে চাইছে। তা নাহলে আচমকা কেন এই স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন?’ দুই সাংসদেরই দাবি, আসলে এর আড়ালে এনআরসির ধাঁচেই ভোটার লিস্ট থেকে তৃণমূলী ভোটারদের বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে মোদি-শাহর দল।

    যদিও নির্বাচন কমিশন এদিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিহারে স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশনের কাজ সংবিধানের মেনেই করা হচ্ছে। বিহারের ভোটার সংখ্যা ৭ কোটি ৮৯ লক্ষ ৬৯ হাজার ৮৪৪। ২০০৩ সালের ১ জানুয়ারি যে ইন্টেনসিভ রিভিশন হয়েছিল, সেখানে ৪ কোটি ৬৯ লক্ষ ভোটারের নাম নথিভুক্ত আছে। ফলে তাদের শুধু নতুন করে ফর্ম ফিলাপ করলেই চলবে। ৫ কোটি ৭৪ লক্ষ ৭ হাজার ২২ জনের কাছে এসএমএস গিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)