• নির্যাতিতাকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ, আইন কলেজে মহিলা কমিশন
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৯ জুন ২০২৫
  • কসবার আইন কলেজ পরিদর্শনে এল জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল। কমিশনের সদস্যা অর্চনা মজুমদারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল রবিবার সকালে কলেজে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। নির্যাতিতার বাবার সঙ্গেও কথা বলবেন তাঁরা। শনিবার নির্যাতিতার বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল কমিশনের প্রতিনিধিদলের। কিন্তু শনিবার ঘটনার পুনর্নির্মাণ করার জন্য নির্যাতিতাকে কলেজে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সেই কারণে কমিশনের প্রতিনিধিরা তাঁদের বাড়ি যেতে পারেননি।

    রবিবার সকালেই প্রথমেই জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা কসবা থানায় পৌঁছোন। সেখান থেকেই যান কলেজে। তার পরে নির্যাতিতার বাড়ি যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁদের। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কলেজের নিরাপত্তারক্ষীও। ঘটনার দিনের যে ৭ ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে এসেছে, সেখানে চার জনকেই দেখা গিয়েছে। অর্থাৎ, ঘটনাস্থলে চার জনের উপস্থিতি নিশ্চিত। বাকি বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

    কসবার ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে কলকাতা পুলিশ। পাঁচ সদস্যের ওই তদন্তকারী দলের নেতৃত্বে রয়েছেন কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ শহরতলি) প্রদীপকুমার ঘোষাল। ইতিমধ্যে ‘নির্যাতিতা’ এবং তাঁর বাবা-মায়ের গোপন জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আবেদন করেছে সিট। সূত্রের খবর, শনিবার সকালে অভিযোগকারীকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য। তার ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। দু’ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পুনর্নির্মাণ হয়েছে।

    প্রায় ৭২ ঘণ্টা পর পুলিশি নিরাপত্তার মাঝে ঘটনাস্থলে যান নির্যাতিতা। শনিবার সন্ধ্যা ৮টা ১৫ মিনিট নাগাদ সেখানে তাঁকে নিয়ে আসে কলকাতা পুলিশ। এরপর দু’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে ঘটনার পুনর্নিমাণ। নির্যাতিতার কাছ থেকে কোথায়, কী ঘটেছিল সবটা জানতে চায় পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতার কলেজে প্রবেশ থেকে গোটা ব্যাপারটা ভিডিওগ্রাফি করেছেন তদন্তকারীরা। কখন, কোথায় ছিলেন তিনি, কী কী ঘটেছিল তাঁর সঙ্গে, প্রতিটা বিষয় সেই ভিডিয়োগ্রাফি মাধ্যমে রেকর্ড করেছে পুলিশ।

    এদিকে কসবাকাণ্ডে মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন আরেক কলেজের অধ্যক্ষ। সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২৫ জুন। কিন্তু ২৪ জুন রাতে গণধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজেদের দলবল নিয়ে বালিগঞ্জের অবস্থিত মেয়েদের কলেজ ‘কলকাতা গার্লস বিটি কলেজে’-র ভিতর প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। অধ্যক্ষা মাকসুদা খাতুন জানান, শুধু ২৪ জুন নয়, তিন মাস আগেও সে একই ভাবে কলেজের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। সেই সময় তাঁর সঙ্গে আবার একটি মেয়ে ছিল বলে দাবি অধ্যক্ষার। সন্ধ্যার পর এসে জোর করে কলেজের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে অভিযুক্ত।

    বিটি কলেজের প্রিন্সিপাল বলেন, ‘২০২০ সালের আগে যখন একই ক্যাম্পাসে দুটি কলেজ ছিল, তখন নিত্যদিন ওই যুবক এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা ক্যাম্পাসের ভেতরে অশান্তি লাগিয়ে রাখত। শিক্ষিকারা এবং বিটি কলেজের ছাত্রীরা রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন। সাউথ কলকাতা ল কলেজের ক্যাম্পাসের ভিতরে নিত্যদিন মারপিটে জড়িয়ে পড়ত অভিযুক্ত। সেই অশান্তি আছড়ে পড়ত আমাদের কলেজের ক্যাম্পাসের গায়ে। বারবার এই ঘটনার জন্যই দুটি কলেজ আলাদা হয়।’
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)