শনিবার গভীর রাতের বৈঠকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি ভোট নিয়ে নির্দেশ! সেন্ট্রাল লক আপ থেকেই ভার্চুয়ালি যোগ সুকান্তের
আনন্দবাজার | ২৯ জুন ২০২৫
রাজ্য বিজেপির সভাপতি নির্বাচনের নির্ঘণ্ট স্থির করে ফেললেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। শনিবার রাতে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েও দেওয়া হল দিনক্ষণ। লালবাজারের সেন্ট্রাল লকআপ থেকেই সেই বৈঠকে যোগ দিলেন রাজ্য বিজেপির বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর কয়েক দিনের মধ্যে ঘোষিত হতে চলেছে রাজ্য বিজেপির পরবর্তী মেয়াদের সভাপতির নাম। মনোনয়নপত্র জমা নিয়ে সাংগঠনিক নির্বাচনের নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনেই এ বার রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা করতে চলেছে বিজেপি।
শনিবার রাতে ‘বুথ সশক্তিকরণ অভিযান’ নিয়ে বিজেপির একটি পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক ছিল। রাত ১০টার পরে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সেই বৈঠক শুরু হয় বলে বিজেপি সূত্রে খবর। বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল এবং দুই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে, অমিত মালবীয়। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত তখন পুলিশের হাতে আটক হয়ে লালবাজারে। কসবার কলেজকাণ্ডের প্রতিবাদে গড়িয়াহাট মোড়ে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে পুলিশের হাতে শনিবার বিকেলে আটক হন তিনি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, লালবাজারে বসেই সুকান্ত ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। এ ছাড়া রাজ্য বিজেপির সংগঠন সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদকেরা এবং ‘বুথ সশক্তিকরণ’-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা-নেত্রীরা শনিবারের বৈঠকে ছিলেন।
বিজেপি সূত্রে খবর, জেলা, মণ্ডল, শক্তিকেন্দ্র, বুথ— সব স্তরে পূর্ণাঙ্গ সাংগঠনিক বিন্যাস তৈরি নিয়ে মূলত বৈঠকে আলোচনা হচ্ছিল। তবে তাঁর ফাঁকেই বনসল রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়ে দেন, সভাপতি নির্বাচনের দিনক্ষণ। বিজেপি সূত্রে খবর, ২ জুলাই সভাপতি নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পত্র জমা নেবেন দিল্লির দূত রবিশঙ্কর প্রসাদ। মনোনয়ন সংক্রান্ত যাবতীয় প্রক্রিয়া ২ তারিখেই সম্পন্ন হবে। পরের দিন, ৩ জুলাই নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে পরবর্তী মেয়াদের সভাপতির নাম ঘোষণা করে দেওয়া হবে। ‘সভাপতি বরণ’ অনুষ্ঠানও ৩ জুলাইয়ে সেরে নেওয়া হবে। ৩ তারিখের জন্য বাইপাস সংলগ্ন একটি প্রেক্ষাগৃহ নেওয়ার বিষয়ে কথাবার্তা শুরু হয়ে গিয়েছে বিজেপির অন্দরে।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পরে সেপ্টেম্বর মাসে সুকান্ত রাজ্য বিজেপির সভাপতি হন। দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে সুকান্তের নাম সরাসরি ঘোষণা করা হয় দিল্লির তরফে। পরে প্রদেশ পরিষদের বৈঠক ডেকে সুকান্তের নামে আনুষ্ঠানিক ভাবে সিলমোহর নেওয়া হয়। সেই থেকে সুকান্তরই বিজেপির রাজ্য সভাপতি। বিজেপিতে যেহেতু এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি রয়েছে, তাই সুকান্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পরে রাজ্য সভাপতির পদ সামলাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। এই আবহে রাজ্য বিজেপির সভাপতিকে এ রাজ্যে আরও সময় দিতে হবে। সেটা সুকান্তই করবেন, না কি অন্য কেউ দায়িত্ব নেবেন, রাজ্য নেতৃত্বের কাছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আর কয়েক দিনের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যাবে, রাজ্য বিজেপির রাশ কার হাতে থাকবে।