• আরজি কর-কাণ্ডের পরে ফের ধর্ষণ শহরে, ‘এত পথে নামলাম, আমরা কি ব্যর্থ’, প্রশ্নে কিঞ্জল
    আনন্দবাজার | ২৯ জুন ২০২৫
  • মেয়ে বড় হচ্ছে তাঁর। এ বছরের রথযাত্রায় নিজে নিজে রথ টেনেছে। চিকিৎসক-অভিনেতা বাবা কিঞ্জল নন্দ খুব খুশি। “এই সে দিন জন্মাল। দেখতে দেখতে বড় হয়ে যাচ্ছে। যেন চোখের পলক পড়তে দিচ্ছে না”, কিঞ্জলের গলায় যেন প্রচ্ছন্ন ভাললাগা। নিজের সেই ভাললাগা তিনি ভাগ করে নিয়েছেন আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে। বাবা হিসাবে একটু ভয়ও কি করছে? সদ্য কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ প্রাঙ্গণে ধর্ষণের শিকার সেখানকারই এক ছাত্রী। প্রসঙ্গ তুলতেই তিনি জানিয়েছেন, ওই জন্যই মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষক শিবায়ন গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে তিনি অনুরোধ করেছেন। মেয়ে আর একটু বড় হলে তাঁর কাছে ভর্তি করে দেবেন। মেয়ে যাতে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারে।

    মাত্র দশ মাস আগের কথা। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় ধর্ষিত হয়ে মৃত্যু হয় এক তরুণী চিকিৎসকের। এই হাসপাতালের ছাত্র-চিকিৎসক কিঞ্জল। সেই সময় তিনি এবং তাঁর সতীর্থেরা রাতের পর রাত জেগেছেন। পথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ধর্নামঞ্চে বার বার নির্যাতিতার হয়ে ন্যায় চেয়েছেন। দশ মাস পরে ফের একই ঘটনা। ফারাক এ টুকুই, আক্রান্ত ছাত্রী জীবিত। প্রতিবাদ জানাতে পথে নামবেন না কিঞ্জল? প্রশ্ন রাখতেই আফসোস করেছেন তিনি। বলেছেন, “পথে তো আমরা নেমেই আছি। কিন্তু তার কোনও ফল ফলছে কি? আরজি কর-কাণ্ডের দশ মাসও গেল না, ফের একই ঘটনা শহরের আর একটি কলেজে। নিজেকে কোথাও ব্যর্থ মনে হচ্ছে।” একই প্রশ্ন তিনি রেখেছেন সমাজের কাছে, সাধারণ মানুষের কাছেও, “এত রাত জাগলাম, এত পথে নামলাম। তার কোনও ছাপই পড়ল না? আমরা কি ব্যর্থ?”

    এর বাইরে আর কী করা যেতে পারে, সেটাও বুঝে উঠতে পারছেন না ‘হুল’ ছবির অন্যতম নায়ক। দেশবাসী, রাজ্যবাসী বা শহরবাসী যতই দাবি করুন, এখনও সরকারি স্কুলে যৌনশিক্ষার কোনও পাঠক্রম চালু হয়নি। হলে কি সমস্যার সমাধান হত? “কী বলি বলুন তো! যৌনশিক্ষার পাঠক্রম অবশ্যই স্কুল থেকে চালু করা উচিত। কিন্তু হচ্ছে কই!” তাঁর পরামর্শ, “যত দিন না স্কুলে পাঠক্রম চালু হচ্ছে তত দিন অভিভাবকেরাই এই দায়িত্ব নিন। ছেলে হোক বা মেয়ে— বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে কোন আচরণ সঠিক কোনটি নয়, শেখান ছোট থেকেই। তাতে যদি সমাজ শুধরোয়।”

    “ভবিষ্যতে এই শিক্ষা আমার মেয়েকেও দেব”, এমনই ভাবনা কিঞ্জলের।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)