আজকাল ওয়েবডেস্ক: চলতি বছর শহর কলকাতায় চিকিৎসা জগতের এক ব্যতিক্রমী প্রয়াসে আয়োজিত হল ‘হোপকন’ ২০২৫। তিনদিনব্যাপী এই বিশেষ সম্মেলনে দেশের খ্যাতনামা চিকিৎসকরা মিলিত হয়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা, চিকিৎসা গবেষণা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন। মূলত তিনটি বড় উদ্যোগকে সামনে রেখেই শুরু হয় এই সম্মেলন। প্রথমত, দেশের চিকিৎসকদের জন্য আন্তর্জাতিক ডিগ্রি যেমন MRCP, FRCS ডিগ্রি অর্জন করছে যে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা দূর করতে আন্তর্জাতিক সমতুল্য শিক্ষা কাঠামো গঠনের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
হোপকনের অন্যতম উদ্যোক্তা চিকিৎসক পয়োধি ধর জানান, “ভারতীয় চিকিৎসকরা বিদেশে গিয়ে যেভাবে এমআরসিপি, এফআরসিএস করছেন, আমরা চাই সেই শিক্ষা ও ডিগ্রিগুলি ভারতে সমতুল্যভাবে আনা হোক।” দ্বিতীয়ত, সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশ এবং গ্রাম্য অঞ্চলগুলিতে আধুনিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা পৌঁছে দেওয়ার দিকেও জোর দেওয়া হয়। তৃতীয়ত, প্রবীণদের জন্য ‘জেরিয়াট্রিক মেডিসিন’-এর পরিকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার বার্তা দেন চিকিৎসকেরা। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন প্রবীণ স্বাস্থ্যসেবা, শিশুচিকিৎসা, হেমাটোলজি, নিউক্লিয়ার মেডিসিন ও চিকিৎসা উদ্যোগ বিষয়ক একাধিক সেশনে বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।
হেমাটোলজিতে লিউকেমিয়া রোগীদের ব্যবস্থাপনা এবং নিউক্লিয়ার মেডিসিনে রেডিওআইসোটোপ থেরাপির সর্বাধুনিক অগ্রগতি তুলে ধরেন বক্তারা। চিকিৎসক পয়োধি ধর ‘হেলথকেয়ার এন্টারপ্রেনারশিপ’ নিয়ে বিশেষভাবে আলোচনা করেন, যেখানে ভারতীয় চিকিৎসকদের উদ্যোগ ও সুযোগ বিষয়ে বিশ্লেষণ করা হয়। জেরিয়াট্রিক মেডিসিনে ক্লিনিকাল ওয়ার্কশপে চিকিৎসক বিবেক আগরওয়াল, হিমাদ্রি দাস ও পার্থ প্রতিম দাস প্রবীণদের অস্থিক্ষয়, সারকোপেনিয়া ও হঠাৎ পড়ে গেলে পরিস্থিতির মোকাবিলা সহ নানা বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেন। এক প্যানেল ডিসকাশনে “প্রবীণদের ঘরোয়া যত্ন” নিয়ে বিশদ আলোচনা হয় চিকিৎসক ধীরেশ চৌধুরীর সঞ্চালনায়।
উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক তুলিকা ভট্টাচার্য, চিকিৎসক অঞ্জন অধিকারী, অনিন্দ্য দাস, অভিনেত্রী পিলু বিদ্যার্থী, শকুন্তলা বড়ুয়া ও চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার প্রমুখ। অন্যান্য সেশনে উঠে আসে প্রেসক্রিপশন অডিটিং, ইরেকটাইল ডিসফাংশনের আধুনিক থেরাপি, ডায়ালিসিস ও লিভার রোগীদের ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা এবং স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়। চিকিৎসক পয়োধি ধর সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘হোপকন এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চিকিৎসা জগতকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার এক উদ্যোগ। চিকিৎসা শিক্ষা, সমাজসেবা এবং প্রগতিশীল চিন্তাভাবনার সমন্বয়ে এই উদ্যোগ এক নতুন দিগন্তের সূচনা করবে’।