• অসচেতনতার কারণে ডোমকলে ১৫ দিনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনজনের মৃত্যু
    বর্তমান | ৩০ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ডোমকল: এক বা দু’টি বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনা নয়, গত ১৫ দিনে ডোমকল মহকুমায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। অথচ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার তরফে লাগাতার প্রচার চলছে—ভেজা হাতে সুইচে হাত না দেওয়া, খোলা তার থেকে দূরে থাকা, মেন সুইচ অফ না করে বিদ্যুৎ লাইন স্পর্শ না করা, ঝড়বৃষ্টির সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা। কিন্তু বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার লাগাতার প্রচার, সতর্কবার্তা— সবই উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের গাফিলতিতে। তাঁদের সচেতনতার ঘাটতি আর গা-ছাড়া মনোভাবই যেন এইসব মৃত্যুর অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূত্রের খবর, তিনটি মৃত্যুর ক্ষেত্রেই প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে একটাই কথা—সতর্ক থাকলে হয়তো এই দুর্ঘটনাগুলি এড়ানো যেত!

    প্রসঙ্গত, ১৪ জুন সাগরপাড়ার হালদারপাড়ায় মারা যায় বছর বারোর মেধাবী ছাত্র বিপ্লব হালদার। ইউটিউব দেখে ঘরে বসে ইলেকট্রনিক খেলনা গাড়ি বানাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় সে। বাড়ির লোক যখন কাজে মগ্ন ছিল, তখনই আড়ালে ঘরের মধ্যে খেলনা তৈরিতে ব্যস্ত ছিল সে। খেলার মধ্যেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় সে।

    তার ঠিক সাতদিন পরে, ২১ জুন রানিনগরের ভাটুকোমনগরে মেইন সুইচ অফ না করেই বাড়ির তার গোছাতে গিয়ে মৃত্যু হয় ২৫ বছরের তৌহিদ শেখের। গর্ভবতী স্ত্রীকে রেখেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান তিনি। স্থানীয়রা বলছেন, সামান্য সতর্ক হলেই বিপদ এড়ানো যেত।

    শেষ ঘটনাটি শুক্রবারের। ইসলামপুরের এসেরপাড়ায় জুম্মার নামাজে যাওয়ার আগে স্নান করার সময় দেখা যায় রাজু মণ্ডল (২৯) লক্ষ্য করেন বাড়ির জল তোলা মোটর চলছে না। ওই অবস্থাতেই তিনি লেগে পড়েন বিদ্যুৎ লাইন সারানোর কাজে। তাও আবার মেইন সুইচ অফ না করেই। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকরা ঘোষণা করেন আগেই মারা গিয়েছেন তিনি। 

    বিদ্যুৎ নিরাপত্তা সম্পর্কে মারাত্মক অসচেতনতা থেকেই বারবার ঘটছে দুর্ঘটনা। এমনকী আরসিবি বা এমসিবি’র মতো গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ডিভাইস সম্পর্কেও নেই ন্যূনতম ধারণা। ইলেকট্রিশিয়ান না ডেকে নিজেরাই বিদ্যুৎ লাইন মেরামতির ঝুঁকি নিচ্ছেন বহু মানুষ। 

    এদিকে নিজেদের প্রচারে খামতি নেই বলে দাবি বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার। বিদ্যুৎ দপ্তরের ডোমকল মহকুমার বিদ্যুৎ বিভাগের ডিভিশনাল ম্যানেজার দীপঙ্কর বিশ্বাস বলেন, লাগাতার প্রচার চলছে। মোবাইল ভ্যান, মাইকিং, ক্যাম্প—সবই চলছে। কিন্তু মানুষ নিজে সচেতন না হলে দুর্ঘটনা ঠেকানো দুঃসাধ্য।
  • Link to this news (বর্তমান)