• হেলমেট ছাড়াই বান্ধবীকে নিয়ে জয়রাইড, মৃত যুগল
    বর্তমান | ৩০ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রবিবার বেলা ১১টা। ছুটির দিনে ফাঁকা রাস্তাঘাট। বান্ধবীকে বাইকে বসিয়ে জয়রাইডে বেরিয়েছিলেন এক যুবক। কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। এ জে সি বোস রোড ফ্লাইওভারে উঠেই বাইকের গতি তুঙ্গে তুলে দেন যুবক। এ জে সি বোস রোড ফ্লাইওভার থেকে মা উড়ালপুলে ঢোকার মুখে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইকটি সরাসরি ধাক্কা মারে ডিভাইডারে। বেশ কিছুটা দূরে ছিটকে পড়েন দু’জনে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁদের। পুলিস জানিয়েছে, মৃতদের নাম আদিত্য সিং (২১) ও নেহা সিং (২৭)। আদিত্য সিং কিরণশঙ্কর রায় রোডের বাসিন্দা। কাশীপুরের জৈন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিন বছর ধরে বাগুইআটির বাসিন্দা নেহার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক। পরিবারের সদস্যরাও তাঁদের সম্পর্কের বিষয়ে জানতেন।

    পুলিস জানতে পেরেছে, রবিবার দু’জন একসঙ্গে প্রাতরাশ করবেন বলে বেরিয়েছিলেন। খুব দেরি না করে বাড়ি চলে আসার কথা ছিল তাঁদের। তাই হেলমেট ছাড়াই বেরিয়ে পড়েন। কিন্তু প্রাতরাশ সারতে তাঁদের কিছুটা দেরি হয়। বেলা ১১টা নাগাদ হসপিটাল রোড হয়ে এ জে সি বোস ফ্লাইওভারে ওঠেন তাঁরা। স্পোর্টস বাইক তখন ৮০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ছুটছে। বাগুইআটির বাড়িতে বান্ধবীকে ছেড়ে আসার জন্যই আদিত্য ওই পথ ধরেছিলেন বলে খবর পুলিস সূত্রে। 

    সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বাইক চালকের বাম দিকে একটি গাড়ি ছিল। সেই গাড়িটিকে ওভারটেক করে এগিয়ে যেতে চেয়েছিলেন আদিত্য। কিন্তু বাইকের গতি বেশি থাকায় নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি তিনি। সরাসরি ডিভাইডারে ধাক্কা মারেন। ছিটকে পড়েন তাঁরা। দু’জনের মাথায় গুরুতর চোট লাগে। রক্তে ভেসে যায় রাস্তা। পরপর গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়। খবর যায় ইস্ট ট্রাফিক গার্ডে। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কড়েয়া থানার পুলিসও। রক্তাক্ত অবস্থায় যুগলকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা দু’জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দোমড়ানো মোচড়ানো অবস্থায় বাইকটি উদ্ধার করেছে পুলিস। দুপুরেই মৃতদের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। ময়নাতদন্তের পর আদিত্য ও নেহার দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে বাড়ির সদস্যদের হাতে। 

    এই ঘটনায় ফের একবার রবিবারের সকালে শহরের রাস্তায় পুলিসের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ডি এল খান রোড ক্রসিং থেকে বিনা হেলমেটে বাইকচালক ও আরোহী কীভাবে এ জে সি বোস ফ্লাইওভারে উঠলেন, কোথায় ছিল পুলিস—সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। 

    লালবাজারের দাবি, বিপজ্জনকভাবে বাইক চালাচ্ছিলেন আদিত্য। ট্রাফিক বিধির কোনও তোয়াক্কা না করেই চলছিল জয়রাইড।  এদিকে, এদিন ট্যাংরা থানা এলাকার পিলখানা রোডে আরও একটি পথ দুর্ঘটনা ঘটে। পণ্যবাহী গাড়ির ধাক্কায় এক পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম মহম্মদ মুর্শিদ (৪২)।
  • Link to this news (বর্তমান)