নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: রাতারাতি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল দমদম সেন্ট্রাল জেল মাঠের ডঃ বি আর আম্বেদকর পার্ক ও শিশু উদ্যান। পুরসভার ওই কাজের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ, আন্দোলন সহ প্রশাসনের সর্বস্তরে চিঠি দিয়েছিলেন স্থানীয়রা। ভাঙার পর যে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল, তা মাস পাঁচেকের জন্য থমকে যায়। তারপর গত ২১ জুন ওই জায়গায় নতুন করে মিনি স্টেডিয়ামের শিলান্যাস করা হয়েছে। পুরসভার দাবি, নিজস্ব ফান্ড থেকে এক কোটি টাকা খরচ করে ওই জায়গায় মিনি স্টেডিয়াম হবে। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি, মানুষের চোখে ধুলো দিতে নতুন করে স্টেডিয়াম তৈরির অজুহাত খাড়া করা হয়েছে। আসলে গুরুত্বপূর্ণ ওই জায়গায় স্টল তৈরি করে লক্ষ লক্ষ টাকায় বেচে দেওয়াই মূল উদ্দেশ্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯২ সালে দমদম সেন্ট্রাল জেল মাঠের নামকরণ হয়েছিল ডঃ বি আর আম্বেদকর ক্রীড়াঙ্গন। মাঠের শৈলেন দাস সরণি লাগোয়া অংশে আম্বেদকরের মূর্তি বসায় পূর্তদপ্তর। মূর্তি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে ডঃ বি আর আম্বেদকর ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড এডুকেশন সেন্টার। সেই মূর্তির দু’পাশে তৈরি হয় ডঃ আম্বেদকর পার্ক ও শিশু উদ্যান। বয়স্কদের বসার বেঞ্চ, শিশুদের খেলার নানা ধরনের রাইড সহ বেশ কিছু সুবিধা মিলত সেখানে। গত কয়েক বছর ধরে তা বেহাল অবস্থায় পড়েছিল। এর মধ্যে গত ৬ ডিসেম্বরে ওই পার্ক ভেঙে রাতারাতি নির্মাণকাজ শুরু হয়। দ্রুততার সঙ্গে পিলার তুলে নতুন ঘর তৈরির কাজও শুরু হয়ে যায়। এনিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভও শুরু হয়। খবর ছড়ায়, পার্কের জায়গায় স্টল তৈরি করবে পুরসভা। এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় স্থানীয় একাধিক সামাজিক সংগঠন। এলাকায় মিছিল, পুরসভায় স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী সহ প্রশাসনের সর্বস্তরে চিঠি দেওয়া হয়। কাজ বন্ধ হয়ে যায়। গত মে মাসে পুরসভা আন্দোলনকারী সংগঠনগুলিকে ডেকে জানায়, ওই জায়গায় তৈরি হবে মিনি স্টেডিয়াম। একবার জয়েন্ট ভিজিটও হয়। গত ২১জুন ওই জায়গায় মিনি স্টেডিয়ামের শিলান্যাস হয়। পুরসভার এই পদক্ষেপে বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে।
ডঃ বি আর আম্বেদকর ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড এডুকেশন সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক বিমলকৃষ্ণ দাস বলেন, ‘ওই জায়গায় পুরসভা প্রথমে স্টল তৈরির কাজ শুরু করেছিল। আন্দোলনের চাপে স্থগিত রাখে। এখন বলছে মিনি স্টেডিয়াম হবে। মাত্র দু’বিঘা জমিতে স্টেডিয়াম হয় না। আমরা চাই, স্পোর্টস কমপ্লেক্স হোক ও শিশু উদ্যান আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হোক। স্টল বেচে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতেই স্টেডিয়ামের গল্প ফাঁদা হয়েছে।’ পুরসভার চেয়ারম্যান হরেন্দ্রনাথ সিং অবশ্য বলেন, ‘১ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই জায়গায় মিনি স্টেডিয়াম গড়বে পুরসভা। স্টেডিয়াম তৈরির পর ফাঁকা জায়গা থাকলে তা যে কোনও কাজে ব্যবহার করা হবে। কিছু মানুষ অসৎ উদ্দেশ্যে কাজ আটকানোর চেষ্টা করছে।’