নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ, পুলিস, কাস্টমস থেকে সিবিআই! ভুয়ো আধিকারিক সেজে পরপর ভিডিও কল। আইনি ঝামেলার ভয় দেখিয়ে ডিজিটাল অ্যারেস্টের নামে প্রতারণা। এবার এই প্রতারণায় নয়া সংযোজন ‘রিজার্ভ ব্যাঙ্ক’! ভুয়ো পুলিস, সিবিআইয়ের ফোনের পর হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করছেন ‘রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার কর্তা’ স্বয়ং! জানতে চাইছেন, ব্যাঙ্কে কত টাকা আছে! এমনকী, পাসবইয়ের ছবি তুলে পাঠানোর নির্দেশও দিচ্ছেন! সম্প্রতি, রাজারহাটের এক ব্যক্তি ডিজিটাল অ্যারেস্টের শিকার হওয়ার পর এমনই তথ্য পুলিসের হাতে এসেছে।
বহু মানুষ এখন ডিজিটাল অ্যারেস্টের ফাঁদে পড়ছেন। পুলিসের কথায়, ডিজিটাল অ্যারেস্ট বলে বাস্তবে কোনও গ্রেপ্তারি নেই। মানুষ অকারণে ভয় পেয়ে বিপদে পড়ছেন। কারণ, প্রতারকরা কখনও ক্রাইম ব্রাঞ্চ, কখনও কাস্টমস, কখনও সিবিআই অফিসার পরিচয় দিয়ে মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। ভুয়ো অভিযোগও তোলা হচ্ছে। তারপরই ডিজিটাল অ্যারেস্ট করে তাঁকে বাড়িতেই দু’-তিনদিন থাকতে বলা হচ্ছে। ওই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন আধিকারিক ভিডিও কল করে বিভ্রান্ত করছে। তারপর গ্রেপ্তারি এড়াতে শুরু হচ্ছে সমঝোতা। বহু মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে ফেলছেন। কিছুদিন আগেই সল্টলেকের এক ব্যক্তি একইভাবে ডিজটাল অ্যারেস্টের ফাঁদে পড়ে ১ কোটি টাকা দিয়ে ফেলেন। সেই ঘটনায় একজন গ্রেপ্তারও হয়েছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজারহাটের ওই ব্যক্তির কাছে প্রথমে মুম্বইয়ের একটি ক্যুরিয়ার সার্ভিস সংস্থার নাম করে ফোন এসেছিল। তাঁকে জানানো হয়, তাঁর নামে একটি অবৈধ পার্সেল এসেছে। তারপর প্রতারকরা সাইবার ক্রাইম থানার অফিসার পরিচয় দিয়ে ফোন করে। এরপর সিবিআই অফিসার সেজেও ভিডিও কল করা হয়। পাঁচ-সাত বছর জেল হবে বলে ভয় দেখানো হয়। তারপর ওই ব্যক্তিকে একজন হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কল করে। সে নিজেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার এক কর্তা বলে পরিচয় দেয়। অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স জানতে চেয়ে পাসবইয়ের ছবি পাঠাতে বলে। ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে তখন ২ লক্ষ ৩১ হাজার ৮৫৩ টাকা ছিল। তিনি সাতপাঁচ ভেবে সেই ছবি পাঠিয়ে দেন। প্রতারকরা অবশ্য পুরো টাকা নেয়নি! ১১ হাজার টাকা রেখে বাকি ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা আরটিজিএস করতে বলে তারা। রাজারহাটের ওই ব্যক্তি সেই টাকা পাঠিয়েও দেন। পরে বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।