অনলাইন কেনাকাটার রিভিউ থেকে ছবি হাতিয়ে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলছে প্রতারকরা, ক্রেতাদের সতর্কবার্তা পুলিসের
বর্তমান | ৩০ জুন ২০২৫
শ্যামলেন্দু গোস্বামী, বারাসত: ফেসুবক, হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা ইনস্টাগ্রাম থেকে কোনও ব্যক্তির ছবি চুরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলার কৌশল এখন অতীত। প্রতারকরা এখন হাত বাড়িয়েছে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের রিভিউ সেকশনে। পোশাক, হার কিংবা চশমার ফ্রেম কেনার পর তা পরে কেউ কেউ রিভিউ সেকশনে মতামত সহ ছবি আপলোড করেন। সেই ছবিকে কপি করেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলছে প্রতারকরা। এই ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। কারণ, প্রতারকের দল ওই অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা চাইছে তাঁর পরিচিতদের কাছ থেকে। এমনকী, ওই ভুয়ো অ্যাকাউন্টকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপও চলছে বলে অভিযোগ। স্বাভাবিকভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় রিভিউ বক্সে নিজেদের মুখের ছবি না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা।
যতদিন যাচ্ছে সাইবার প্রতারণার নিত্য নতুন কৌশল বের হচ্ছে। ডিজিটাল অ্যারেস্ট থেকে এটিএম কার্ডের পিন হাতানো বা লগ্নির নাম করে আর্থিক প্রতারণার ঘটনা পুরনো হয়ে গিয়েছে। এখন উদ্বেগ বাড়িয়েছে ছবি চুরি করে প্রতারণার ঘটনা। বিভিন্ন সময় দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ছবি ইউজারের অজান্তেই চুরি করে তৈরি হয় ভুয়ো অ্যাকাউন্ট। প্রতারণার ধরন ‘আপডেট’ করেছে জালিয়াতরা। ডিজিটাল ব্যবস্থায় সবাই অনলাইনে কমবেশি কেনাকাটা করেন। তার ‘ফিডব্যাক’ হিসেবে রিভিউ সেকশনে গিয়ে অনেক ক্রেতা ছবি আপলোড করেন। কেউ হয়তো ৫০ শতাংশ ছাড়ে শাড়ি বা গলার হার কিনেছেন। সেই জিনিস পরে মহিলা হাসিমুখের ছবি আপলোড করেছেন রিভিউ সেকশনে। কেউ আবার চশমার নতুন ফ্রেম চোখে লাগিয়ে ছবি তুলে তা পোস্ট করেছেন সেখানে। ওত পেতে থাকা প্রতারকরা এই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে। অভিযোগ, রিভিউ সেকশনে থাকা ছবি অনায়াসে ডাউনলোড করে নিতে পারে প্রতারকরা। তারপর ওই ছবি ও নাম দিয়ে তৈরি করে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট। জানা গিয়েছে, এমনই ছবি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তৈরি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা দাবি করা হয়েছে। কেউ কেউ আবার ওই ছবিকে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিকৃত করেও সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করছে।
বারাসত সাইবার থানা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই রিভিউ সেকশনে দেওয়া ছবি বিকৃত করার অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযুক্ত ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা দাবি করেছে। প্রত্যেকেরই উচিত এ বিষয়ে বাড়তি সতর্ক হওয়া। পুলিসের ওই সূত্রের দাবি, মূলত কলেজ ছাত্রী বা মাঝবয়সি মহিলাদের ছবি বিকৃত করা হচ্ছে বেশি। গত কয়েকমাসে এধরনের বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে।