উত্তর দিনাজপুরে রাজ্য সরকারের ‘বাংলার বাড়ি’ (গ্রামীণ) প্রকল্পে বেশির ভাগ উপভোক্তার বাড়ি তৈরির কাজ চলছে। এই পরিস্থিতিতে, জেলায় প্রশাসনের অন্দরে ওই প্রকল্পের সমস্ত উপভোক্তার বাড়ির সামনে বাইরের দেওয়ালে নির্দিষ্ট লোগো-সহ নাগরিক তথ্য সংবলিত বোর্ড (সিটিজেন ইনফর্মেশন বোর্ড) লাগানোর কাজের তৎপরতা শুরু হয়েছে। দিন কয়েক আগে ওই প্রকল্পের জেলার নোডাল অফিসার সন্দীপ রায় জেলার নয় বিডিওকে চিঠি দিয়ে এই বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। সন্দীপ বলেন, ‘‘বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হলেই সরকারি নির্দেশ মেনে ব্লক প্রশাসন বাড়ির সামনের দেওয়ালে ওই বোর্ড লাগানোর ব্যবস্থা করবেন।’’
প্রসঙ্গত, জেলার ন’টি ব্লকের ৯৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে ‘বাংলার বাড়ি’ (গ্রামীণ) প্রকল্পে ১ লক্ষ ৭০ হাজার জন উপভোক্তা রয়েছে। তাঁদের বাড়ি তৈরির জন্য দুই দফায় ৬০ হাজার টাকা করে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। জানুয়ারি মাস থেকে উপভোক্তাদের প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার কাজ শুরু হয়। এখন দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া শুরু হয়েছে। সন্দীপের দাবি, জেলার ৯৪ শতাংশ উপভোক্তা বাড়ি জন্য দুই কিস্তির ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পেয়ে গিয়েছেন।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্যের তরফে অ্যালুমিনিয়ামের শিটের উপরে নীল ও কালো কালি দিয়ে একটি গোলাকার লোগো আঁকানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে গোলাকার বৃত্তে ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সম্পূর্ণ খরচায়’ লেখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। নীচে উপভোক্তার নাম ও তাঁর আইডি নম্বর লেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের কটাক্ষ, ‘‘বিধানসভা ভোটে রাজনৈতিক সুবিধা পেতে তৃণমূল প্রশাসনকে ব্যবহার করে ওই উপভোক্তাদের বাড়ির সামনে ওই বোর্ড লাগানোর কৌশল নিয়েছে। অথচ, বহু উপভোক্তাকে ওই প্রকল্পের ঘর পেতে তৃণমূলকে কাটমানি দিতে হয়েছে।” বিজেপির জেলা সভাপতি নিমাইচন্দ্র কবিরাজের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকার কেন্দ্রের টাকায় তৈরি প্রকল্পের বোর্ড লাগায় না। অথচ, এখন রাজনীতি করার জন্য ওই বোর্ড লাগাচ্ছে।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের দাবি, ‘‘কেন্দ্র রাজনৈতিক স্বার্থে রাজ্যকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে টাকা বরাদ্দ করছে না। বিরোধীদের আগে সেই বিষয়ে প্রতিবাদ করা উচিত।’’